নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শুক্রবার,১২ এপ্রিল ২০১৯:
পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ আইনজীবী শাজাহানকে ফেরত পেতে আইনজীবীদের কড়া হুঁশিয়ারির রাত না পেরুতেই মসজিদের সামনে দেখতে পায় স্থানীয়রা। তবে অপহৃত ঘটনার রহস্য জানে না কেউ।
তার স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ভোররাতে অপহরণকারীরা তাকে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে হাত মুখে স্কচটেপ পেচিয়ে ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডে ফেলে রেখে চলে যায়।
তবে কে বা কারা তাকে অপহরণ করেছে এ ব্যাপারে এখনো কিছুই পরিষ্কার জানা যায়নি। বাড়িফেরার পর তিনি কারো কাছে কোন মুখ খোলেননি।
এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারেক মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার রাতে একদল মাইক্রোবাস আরোহী অ্যাডভোকেট শাহজাহান এতমামদারকে জোর করে গাড়িতে তুলে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর তার মাথায় একটি কালো মুখোশ পরিয়ে দেয়। রাত ১২টার দিকে তার জ্ঞান ফিরে এলে তিনি অপহরণকারীদেরকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কোথায় আছেন এবং কেন তাকে অপহরণ করা হয়েছে, তার কি অপরাধ।
তিনি জানান, অ্যাডভোকেট শাহজাহান এতমামদারের এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেয়নি অপহরণকারীরা। শুধু বলে এ ব্যাপারে পরে কথা বলবো। এরপর তাকে একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠে চার দিন আটকে রাখে। এই চার দিনের ভিতর তাকে রুটি জাতীয় শুকনো খাবার দেয়া হয়। বুধবার গভীর রাতে অপহরণকারীরা তার হাত মুখে স্কচটেপ পেচিয়ে তাকে আবার মাইক্রোবাসে উঠিয়ে ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডে এসে ভোর রাতে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এর বাইরে সে আর কিছু বলতে পারেনি।
নিখোঁজের ঘটনায় মানববন্ধন:
অপহৃত শাহজাহান এতমামদার (৬১)কে সুস্থ অবস্থায় অবিলম্বে ফেরত পেতে মানববন্ধন করে আইনজীবী ও তার স্বজনরা। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপিত শাহজাহান মিয়া বলেন, তাঁর সহকর্মী অপহৃত আইনজীবী শাহজাহান এতমামদারকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত না দিলে। পরবর্তীতে সারাদেশে সড়ক মহাসড়কে তীব্র আন্দোলনের ঘোষনা দেয়া হবে। তার পর দিন ভোরে বাড়ি ফিরেন অপহৃত শাজাহান।
সাধারণ ডায়েরিতে যা বলা হয়: রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা মোড়স্থ নিজ চেম্বার থেকে বাসার উদ্দেশে বের হয়ে যান। অনেক রাত হয়ে গেলেও তিনি বাসায় না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে থাকা দুটি মোবাইল ফোন নম্বরে কল করে সংযোগ বন্ধ পান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাডভোকেট শাহজাহানের নম্বর থেকে ছেলে রুপমের নম্বরে মিসড কল আসে। এ সময় ছেলে ফোন ব্যাক করলে তিনি সংক্ষিপ্ত কথায় জানান, “আমি জরুরি কাজে ঢাকায় আসছি, সকালে ফিরবো।” এ সময় তার অনার্স পড়ুয়া মেয়েকে ভালোভাবে পরীক্ষা দেওয়ার কথা বলেন। কোথায় আছেন? কখন গেছেন? প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেননি এবং মোবাইলটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার খোঁজ মিলছে না।