মোমেন খান | নরসিংদী প্রতিদিন-
মঙ্গলবার, ৭ মে ২০১৯:
নরসিংদীর শিবপুরে স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার আসামী জামিনে এসে মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলার বাদী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেও নিরাপত্তাহীরতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন। জেলার শিবপুর উপজেলার শিবপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী মামলার বাদী অনিতা রানী বর্মণ অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে শিবপুর শহীদ আসাদ কলিজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা রাণী বর্মণ (১৬) প্রাইভেট পড়তে গেলে একই এলাকার মৃত সুধীর চন্দ্র বর্মণের ছেলে সজিব চন্দ্র বর্মণ (২৬) তাকে প্রেম নিবেদন করে ফুসলিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার এক পর্যায়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর স্কুলছাত্রী অর্পিতা বিয়ে করার জন্য সজিব বর্মণকে চাপ দেয়। এসময় সজিব তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অপমান অপদস্থ করে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। এঘটনার পর মেয়ে অর্পিতার অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে মা অনিতা বর্মণ জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব ঘটনা জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে মেয়ে অর্পিতা। এ অবস্থায় ২ দিন পর ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর নিজ বাড়ীতে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে অর্পিতা।
এ ঘটনায় স্কুলছাত্রী অর্পিতার মা অনিতা রানী বর্মণ বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। সম্প্রতি আসামী সজিব উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আসেন। জামিন পেয়ে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে ও বার্তা পাঠিয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য মামলার বাদীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এছাড়া গত ১ এপ্রিল বাড়ির পাশে সড়কে এসে আসামী সজিব বর্মণ ও তার মা শিউলী রাণী বর্মণ গালিগালাজ করতে থাকে এবং মামলা তুলে না নিলে খুন করে লাশ গুমের হুমকি দেয়। এসময় চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা চলে যায়। এ অবস্থায় ভীতিকর অবস্থায় দিনযাপন করছে মামলার বাদী অর্পিতার মা ও পরিবারের সদস্যরা। এ হুমকির ঘটনায় মামলার বাদী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মামলার আসামী সজিব বর্মণ ফোন রিসিভ করেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী উপ-পরিদর্শক মাসুদ বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরীর পর তদন্ত করে হুমকির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে এরই মধ্যে আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।