মোখলেছুর রহমান | নরসিংদী প্রতিদি-
মঙ্গলবার,২৮ মে ২০১৯: গাজীপুরের কোনাবাড়ী বাস কাউন্টার গুলোতে ঈদকে সামনে রেখে দূরপাল্লার বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের এক প্রকার জিম্মি করেই এ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে যাত্রিদের । তবে ঈদে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে এ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
কোনাবাড়ী হইতে গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, রংপুর, শঠিবাড়ী,কাউনিয়া,তিস্তা, মোস্তাফি, কুড়িগ্রাম, উলিপুর,চিলমারী,নাগেশ্বরী, ভুরঙ্গামারীর বাস ভাড়া গত একসপ্তাহ আগেও ছিলো ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। ঈদকে সামকে রেখে বাড়ি ফেরা যাত্রিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফাহমিদা হক চেয়ার কোসে রংপুরের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা। নেই তাদের ভাড়া সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট মূল্য তালিকা। ভাড়া কেন এতো বেশী নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ফামিদা হক চেয়ার কোসের টিকিট মাষ্টার আবু বকর নরসিংদী প্রতিদিনকে বলেন, ভাড়া কেন বেশী নেওয়া হচ্ছে আমাদের ম্যানেজার জানেন। ম্যানেজার ইব্রাহীমের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান ও নানান অজুহাদ দেখান।
এছাড়া হানিফ,শ্যামলী, থ্রী স্টার ট্রাভেলস,জাকির ট্রাভেলস,নাবিলা এই কাউন্টারে দেখা গেছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে। হানিফ এন্টার প্রাইজে রংপুরের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১৪০০ টাকা,নাবিলা ১৪০০ টাকা, শ্যামলী ১৪০০ টাকা, থ্রী স্টার ১৩০০ টাকা।
হানিফ এন্টার প্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম নরসিংদী প্রতিদিনকে বলেন ঈদের আগে আসার সময়ে খালি বাস আসতে হয়। আর ঈদের পর যেতে হয় খালি বাস নিয়ে। এ জন্য বাসে কোন প্রকার লাভ হয় না। ফলে কিছুটা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে দূর পাল্লার বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং ভাড়া সংক্রান্ত কোন মূল্য তালিকা না থাকায় ও যাত্রী হয়রানি লাঘবের লক্ষ্যে ঢাকায় বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ভ্রাম্যমাণ কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ যদি কোনাবাড়ী বাস কাউন্টার গুলোতে ভ্রাম্যমাণ কোর্ট পরিচালনা করা হতো তাহলে তারা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সাহস করতোনা বলে জানান দূরপাল্লার যাত্রিরা।
এস কে শাহিন নামে এক যাত্রী বলেন ঢাকা মহাখালী থেকে রংপুর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা আর কোনাবাড়ী থেকে ১২০০/১৪০০ টাকা। তিনি মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী ও বিআরটএ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মোঃ আলামিন মিয়া নামে এক যাত্রী অভিযোগ করে নরসিংদী প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি ৭ দিন যাবত টিকিটের জন্য ঘুরছি আমাকে টিকেট দেয়না’। কাউন্টার মাষ্টারদের এমন ভাব কথা পর্যন্ত বলতে চায়না। অথচ ১ থেকে ৪ জুনের টিকিট বিক্রি করছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা।
শফিকুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন ‘আমরা গার্মেন্টসে চাকুরী করি সারা বছর তেমন ছুটিছাটা পাইনা। ঈদ আইলে মই রংপুর যামু তোরা এতো ভাড়া নেন বারে।’
মাজহারুল ইসলাম নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন প্রতিবছর ঈদ আসলে আমাদের এই হয়রানির স্বীকার হতে হয়। আমরা জিম্মি হয়ে পরি কাউন্টার মাস্টারের কাছে।
এবিষয়ে গাজীপুরের বিআরটিএ সার্কেল অফিসার কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি একটু পরে কল করেন। প্রায় ২ ঘন্টা পরে কল করা হলে তিনি আর ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন।