নিউজ ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০১৯:
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপিত হবে আগামী শনিবার (২২ জুন)। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। এ সময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান শনিবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ দিন ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে জন্মের পরপর (১ ঘন্টার মধ্যে) শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানোসহ প্রথম ৬ মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো এবং শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পরিমাণ মতো সুষম খাবার খাওয়ানোর বিষয়ে প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যখন এই কার্যক্রম গ্রহণ করেন, তখন ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মাঝে রাতকানা রোগের হার ছিল ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের হার শতকরা ১ ভাগের নিচেই রয়েছে। আগামীতে এই হার আমরা শূন্যে নামিয়ে আনতে পারব।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পেইনের দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকাদান কেন্দ্র খোলা থাকবে। শিশুদের ভরা পেটে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো ভালো। কাঁচি দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মুখ কেটে ভেতরে থাকা তরল ওষুধ চিপে খাওয়ানো হবে। জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় বা ইতোমধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এমন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
দেশব্যাপী এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্রসহ অতিরিক্ত ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, ব্রিজের টোল প্লাজা, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, খেয়াঘাট ইত্যাদি স্থানে অবস্থান করবে।
দুর্গম এলাকায় ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য পরবর্তী চারদিন বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আশা করছি এ ক্যাম্পেইনের আওতায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়া থেকে কোনো শিশু বাদ যাবে না। ক্যাম্পেইন চলাকালে যাতে কোনো কুচক্রী মহল নেতিবাচক প্রচার মাধ্যমে এই কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
নিম্নমানের হওয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মানের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাবেন না। একাধিকবার ল্যাব টেস্ট করা হয়েছে। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পর্যবেক্ষণ বা মনিটরিং করার জন্য ক্যাম্পেইনের দিন প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে কমপক্ষে ২ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবে। এই রাউন্ডে দুর্গম এলাকা হিসাবে চিহ্নিত ১২টি জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়নে বাড়ী বাড়ী গিয়ে বাদপড়া শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে না তবে ক্যাম্পেইন পরবর্তী আরো ৪/৫ দিন নির্দিষ্ট ইপিআই কেন্দ্র থেকে ১২টি জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়ন এবং পার্বত্য জেলাসমূহে (রাঙামাটি,বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি) বাদ পড়া শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।