কোথায় আমার মিষ্টি ছেলেবেলা
কার সিন্দুকে হলো সে বন্দি?
কোথায় হারালো দুরন্ত সেই শৈশব
কার সাথে করেছে আজ সন্ধি?
কোন পাড়ায় গেলো গোল্লাছুট
কোথায় গেল দাঁড়িয়াবান্ধা খেলা,
কোন অরণ্যে ধ্যান করছে হৈ চৈ
ঢাকের তালে নাচে বৈশাখী মেলা?
কেমন আছে রঙিন পাখার ফড়িং
কেমন আছে মিষ্টি ছোট্ট পাখি,
কেমন আছে শেখের আমবাগান
অভিমানের জলে ভরা আঁখি?
কেমন আছে আমার সখা দল
গুলতি মার্বেল হলুদ সরিষা মাঠ,
কেমন আছে শীতলক্ষ্যার জল
মুখরিত সেই কদমতলার ঘাট?
মনোরঞ্জন স্যারের ধুতির ভাঁজটা আছে?
বেতের ভয়ে এখনো কেউ কাঁপে?
ব্ল্যাকবোর্ডের ঐ আকাশটায় বর্ণ আঁকে
স্বপ্ন যেথায় চকের গুড়োয় মাপে!
বিটুল পাগলাকে কেউ কি এখন ক্ষ্যাপায়
মারার জন্য আসে কি সে তেড়ে?
আমার মতো দস্যি ছেলের মায়ের
বেহুদা মনে কাঁপন যেতো বেড়ে।
কেমন আছে আমার নাটাই ঘুড়ি
চড়ুইভাতির ছোট্ট থালা বাটি?
কেমন আছে ঝগড়াটে সেই বুঁড়ি
বৃষ্টি শেষে মাতাল সোঁদা মাটি?
কেমন আছে নবান্নের সব পিঠা
এখনো কি শীতে পাতা ঝরে,
বাঁশ বাগানে পাখির কিচিরমিচির
শিউলিতলা ফুলে ফুলে ভরে?
কেমন আছে সুপারির সেই খোল
এখনো কি কেউ চড়ে খোলের মাঝে;
মেঠুপথে চলে ধূলির ঝড় তুলে
মানুষগুলো হাঁড় হা-ভাতে বাঁচে?
ছেচল্লিশ তলার চিলেকোঠায় বসে
দেখি এই শহরের-আকাশ তারা সব,
সেই আমিটা আজো আছি একই
হায়! শুধু চুরি গেলো মিষ্টি শৈশব।
কবি : রফিকুল নাজিম | নরসিংদী প্রতিদিন –
সহকারী শিক্ষা অফিসার চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।