নিজস্ব প্রতিবেদক। নরসিংদী প্রতিদিন-
সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯:
৮৫ বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তিস্তা রেলসেতু দিয়ে প্রতিদিন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ১৮টি ট্রেন। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার সংযোগ রক্ষাকারী এ সেতুর কাঠের স্লিপারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৮৩৪ সালে ২ হাজার ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যরে তিস্তা রেলসেতুটি নির্মাণ করে। এটির মেয়াদ ওই সময় ধরা হয়েছিল ১০০ বছর। বর্তমানে বয়স ১৮৫ বছর। অর্থাৎ মেয়াদের প্রায় দ্বিগুণ সময় পার করছে এ সেতুটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এ রুটের রেলসেতু ও কালভার্টগুলোর অর্ধশত বছরের পুরনো কাঠের স্লিপারের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। রেললাইনের ক্লিপ চুরি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ‘মরণফাঁদে’ পরিণত হয়েছে রেলপথ। বিশেষ করে তিস্তা রেলসেতুর কাঠের স্লিপার
গুলো পচে গেছে। স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর জন্য দুটি পিন দেওয়ার কথা থাকলেও রয়েছে একটি করে। কোনো কোনো স্থানে একদম স্লিপারে লোহার প্লেটই নেই। এ ছাড়া সেতুর পাশে দুই লাইনের জোড়ায় ফিসপ্লেটে চারটি নাট-বল্টু থাকার কথা থাকলেও আছে তিনটি। দিনের পর দিন এভাবে ট্রেন চলাচল করলেও রেলওয়ে কর্মীদের এসব নজরে পড়ে না।
মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা রেলসেতু যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে, তা স্বীকার করেছে রেলওয়ে বিভাগ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে সড়ক ও রেলপথের সব সেতু বা কালভার্টের অবকাঠামো জরিপের নির্দেশ দিলেও তার কোনো কার্যক্রম এ এলাকায় চোখে পড়ছে না। অবশ্য রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সম্প্রতি বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে নতুন আরেকটি সংযোগ হলেই ঝুঁকিপূর্ণ লালমনিরহাট রেলসেতুর পাশে আরও একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
তিস্তা রেলসেতু এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এই তিস্তা রেলসেতুতে কখন যে বড় দুর্ঘটনা ঘটে, বলা যায় না। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে সমাধান করা প্রয়োজন।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার মুহাম্মদ শফিকুর রহমান জানান, গত ২৫ জুন একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিভাগের ছোট-বড় ৪০৮টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তিস্তা রেলসেতু ঝুঁঁকিপূর্ণ নয়। তার পরও তিস্তা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে নতুন করে আরও একটি ডাবল ব্রডগেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।