নিউজ ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শুক্রবার,১৮ অক্টোবর ২০১৯:
বাঙালির ছোট ক্ষিধের প্রিয় খাবারের মধ্যে সিঙ্গারা-সমুচা অন্যতম। ছোট হোটেলগুলো গড়ে উঠে মূলত এই সিঙ্গারা সমুচাকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশে নানা জায়গায় নানারকম সমুচা তৈরি হতে দেখা যায়। ২ টাকা থেকে শুরু করে ১৫-২০ টাকার সিঙ্গারাও রয়েছে।
কথা হলো, এই সিঙ্গারা সমুচাগুলো কিভাবে এলো? আসুন জেনে নেয়া যাক।
ঐতিহাসিক ধারণামতে ফার্সি শব্দ সানবসাগ থেকে সমুচা নামটা এসেছে। এখানে আরেকটা ব্যাপার হলো হিন্দিতে এটাকে সামোসা বলা হলেও পশ্চিমবঙ্গে এর নাম সিঙ্গাড়া! তবে বাংলাদেশে এটাকে বলা হয় সমুচা এবং বাংলাদেশে সমুচা ও সিঙ্গাড়া দুটো সম্পূর্ণ আলাদা খাবার।
১৩ শতকের দিকে আমীর খশরুর লেখা থেকে জানা যায, দিল্লির দরবারে সমুচা পরিবেশিত হতো। সেই সমুচায় মাংস, ঘিসহ আরো অনেক কিছু দেওয়া হতো। তখন এর নাম ছিলো সানবুশাহ।
সে যুগের সমুচা বর্তমান যুগের সমুচার মতো নয় বরং সেই সমুচা ছিলো অনেকটা মোমোস এর মতোই। ভারতবর্ষের সমুচাগুলোর মধ্যে সবথেকে ভিন্নরকম ও মজাদার সমুচা পাওয়া যায় বাংলাদেশে।
মূলত মুঘল শাসনামলে বিশেষ করে সম্রাট আকবরের সময়ে ইরান-আফগান-আরব থেকে বহু লোক ব্যবসা ও চাকরি করতে ভারতবর্ষে আসে, বিশেষত লাহোর-দিল্লির দিকে। তখন সঙ্গত কারণেই পারসিক-আরব সংস্কৃতির সাথে ভারতীয় পরিবেশের সমন্বয় করা জরুরি হয়ে পড়ে।
সম্রাট আকবরের প্রচেষ্টায় নতুন ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠে। খাদ্যাভাসে আসে নতুনত্ব। ভারতীয় খাদ্যাভাসের সাথে মিলিত হয় পারসিক, আরবীয় ও তুর্কি খাদ্যাভাস।
তবে এসব খাবার একদিনে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছায়নি। সম্রাট বাবরকে দিয়ে এর সূচনা, সম্রাট আকবরের আমলে মুঘলাই খাবারের উন্নিতকরণ এবং শেরশাহ, শাহজাহান এবং অওরঙ্গজেব দ্বারা পরিপূর্ণতা পায় মুঘলাই খাদ্যশৈলী।
মুঘলদের তৈরি করে যাওয়া সে সংস্কৃতি আমাদের অন্তত কয়েকশো খাবার উপহার দিয়েছে। সেখান থেকেই ছোট ছোট এসব খাবারের উৎপত্তি।