নিজস্ব প্রতিবেদক। নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার ২০ অক্টোবর ২০১৯:
নরসিংদীর মনোহরদীতে থানায় বিচার চাইতে গেলে এস আই মীর সোহেল রানার হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিল্লাল হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে মনোহরদী থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় শনিবার (১৭ অক্টোবর) নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন মনোহরদী উপজেলার হাফিজপুর গ্রামের আবদুল লতিফ মিয়ার ছেলে।
লিখিত অভিযোগে বিল্লাল হোসেন জানান, আমার স্ত্রীর বড় ভাই কাউসার মিয়ার সাথে তার প্রতিবেশী মজনু ও হোসেন মিয়ার জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। দীর্ঘদিনের এ বিরোধ মিমাংসার জন্য পরামর্শ চাইতে গত বৃহস্পতিবার ১১টায় মনোহরদী থানার এসআই সোহেল রানার কাছে যায়। ওই সময় এস আই সোহেল রানা কাগজপত্র দেখে জানান, জমি দখলে নিয়ে দেয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন এস আই সোহেল রানা।
ঘটনাটি জমির মালিক কাউসার মিয়াকে জানালে তিনি ৫০ হাজার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে টাকার অঙ্ক কমিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানান।
পরে আবার এস আই সোহেল রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে মীর সোহেল রানা রাজি না হওয়ায় তারা বাড়ি ফিরে যায়। পরে ওই দিন রাতেই পুনরায় মনোহরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালামের কাছে গিয়ে ঘটনা খুলে বললে তিনি, শুক্রবার সকালে কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেন।
ওসি তদন্তের কথা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিল্লাল হোসেন, কাউসার মিয়া, সবুজ মিয়া, প্রতিবেশী মোস্তফা হোসেনকেসহ সকল কাগজপত্র নিয়ে থানায় গেলে ওসি তদন্ত কাগজপত্র যাচাই করে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। এ সময় থানার অপারেটর জিয়াউর রহমানের কাছে গিয়ে অভিযোগ লেখার সময় এসআই সোহেল রানা থানায় প্রবেশ করে তাদেরকে দেখে রেগে যান। অভিযোগ লেখা দেখে সোহেল রানা উত্তেজিত হয়ে যান। ওসি তদন্তের কাছে অভিযোগ দায়ের করায় ক্ষ্যাপে যায় মীর সোহেল রানা। তখন ওসি তদন্তের কথা জানালে তিনি আরো ক্ষেপে গিয়ে তার দুই হাত দিয়ে বিল্লাল হোসেনকে দুই গালে চর-থাপ্পড় মারতে থাকেন।
এ সময় বিল্লালের আত্মীয় কাউসার মারতে নিষেধ করায় তাকেও একই কায়দায় মারতে থাকেন এবং তাদের সাথে থাকা সবুজকেও মারতে আসের এস আই মীল সোহেল রানা। এ সময় সবুজ দৌড়ে পালানোর সময় তাকে পেছন দিক থেকে ধাওয়া করেন এসআই সোহেল রানা। এ সময় তাদেরকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন এস আই সোহেল রানা।
এসআই সোহেল রানার এমন লঙ্কাকা-ে থানায় উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ সদস্যরাও হতভাগ হয়ে যান। পরে বিচার প্রার্থীদের চিৎকার শুনে পাশের রুম থেকে ওসি তদন্ত আবুল কালাম দৌড়ে আসেন এবং সোহেল রানার কাছে ভুক্তভোগীদের মারার কারন জানতে চাইলে সোহেল রানা কোনো উত্তর না দিয়েই থানা থেকে বের হয়ে যান।
এ বিষয়ে এসআই মীর সোহেল রানা মোবাইলে জানান, ভুক্তভোগীদের সাথে সামান্য একটু কথা কাটাকাটি হয়।
এঘটনায় পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম জানান, আমি মারামারির ঘটনা না দেখলেও এসআই সোহেল রানা তাদের সাথে রাগারাগি করতে দেখে ধমক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, বিষয়টি সকালে শুনেছি। এটি মিমাংশার চেস্টা চলছে।