সাব্বির হোসেন | নরসিংদী প্রতিদিন – বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ :
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভা সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ রেলওয়ে স্টেশন এর দুই পাশ ছিল ঝোপঝাড়ে ভরা এক ময়লার ভাগাড়। সন্ধা ঘনিয়ে আসলেই অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিনত হতো এই স্থানটি। ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থেকে নানা অপকর্মে লিপ্ত হতো তারা। তাদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়েছে অনেককেই। এছাড়াও আশে পাশের লোকজন নিয়মিত ময়লা ফেলতেন এখানে। ফলে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ ছিল পথচারী ও রেলওয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই রেলওয়ে স্টেশনের দুই পাশের ঝোপঝাড় ও ময়লা যেন পরিস্কার করা হয়।
এ দাবীর প্রতি সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক ও পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন। তাদের প্রচেষ্টায় ঘোড়াশাল পৌরসভার অর্থায়নে ঝোপঝাড় ও ময়লার ভাগাড় সরিয়ে এই স্থানটিতে তৈরি করা হচ্ছে ফুলের বাগান। এ উদ্যোগটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
রেলওয়ে যাত্রী এস.এ গাজী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেশনের ঝোপঝাড় ও ময়লা পরিস্কার করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অবশেষে আমাদের দাবি পূরণ করে এখানে ফুলের বাগান তৈরি করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র ও পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান কে।
পথচারী আবু বকর সিদ্দিক জানান, সন্ধা হলেই অপরাধীরা এখানকার ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থেকে নেশা করে ছিনতাই করতো। এবং বিভিন্ন নেশায় মগ্ন থাকতো। এতে আতংকের মধ্যে দিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হতো। এই স্থানের ময়লা ও ঝোপঝাড় পরিস্কার করে ফুলের বাগান তৈরি করায় ছিনতাইকারীরা আর সহজে এখানে তাদের অপকর্ম চালাতে পারবেনা। এমন একটি ভালো কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়।
চাকুরীজীবি শাহ আরিফুর রহমান জানান, পলাশে তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র নাই। ঘোড়াশাল রেল স্টেশন এলাকাটিতে যে ফুলের বাগান করে একটি বিনোদন স্পট হিসেবে রুপান্তর করা হয়েছে তা দেখার মতো।
সাংবাদিক আক্তারুজ্জামান জানান, রেলওয়ে ফ্লাগ স্টেশনের প্লাটফ্রমটি আধুনিকায়ন করার ফলে সকাল বিকাল এখানে প্রতিদিন শত শত ডায়েবেটিস রোগী সহ বিভিন্ন লোকজন হাটাহাটি করতে এসে নানান বিরম্বনার শিকার হতো। কিন্তু ঝোপঝাড় পরিস্কার করে এখানে ফুলের বাগান করাতে এখানকার পরিবেশ পাল্টে গেছে।
ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক বলেন, রেলওয়ে যাত্রী ও পথচারীদের নির্বিগ্নে চলাচল ও দুর্গন্ধ মুক্ত পরিবেশ করতেই এর দুই পাশের ঝোপঝাড় সরিয়ে সবুজায়ন ও দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এ পরিবেশ ধরে রাখতে হলে যাত্রী ও পথচারীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন বলেন, ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন সেটির সাথে শুরু থেকেই আমি ছিলাম। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা করার পর সেসব স্থানে যেন ফের ময়লার ভাগাড়ে পরিনত না হয়, সে বিষয়ে সকলের সচেতনতা দরকার।
উল্লেখ্য, ঘোড়াশাল রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ঝোপঝাড় ও ময়লা ভাগাড় নিয়ে নরসিংদী প্রতিদিন অনলাইন পত্রিকার ফেইসবুক পেইজে লাইভ ভিডিও প্রচার করা হয়। যেখানে ঘোড়াশাল পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল।