1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
  6. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
  7. wpapitest@config.com : wpapitest :
শুক্রবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

রায়পুরার চরাঞ্চলের ত্রাস বাবুলের নিকট জিম্মি এলাকাবাসী

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২৯৫ পাঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন –
রবিবার,২৪ নভেম্বর ২০১৯ :
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলীয় ৬ ইউনিয়নের একটি হলো চাঁনপুর ইউনিয়ন। প্রবাসী ও কৃষি নির্ভর ওই চরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বাবুল মিয়া নামের এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ধর্ষণ, হত্যা, দাঙ্গা ফ্যাসাদ, জমি দখল, সেতু নির্মাণ ও বিদ্যুৎ সংযোগের নামে কোটি টাকা চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মাদক ব্যবসা, চুরি, অস্ত্রের মহড়াসহ তার বহুমুখী অপকর্মে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন চরাঞ্চলবাসী। দিনের পর দিন তার এসব অপকর্ম চলে আসলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই। প্রাণনাশের ভয় ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস পায় না ভুক্তভোগীরা। বিগত সময়ে একাধিক হত্যাসহ নানা অপকর্মের ঘটনায় বাবুলের বিরুদ্ধে মামলা হলেও প্রভাব বিস্তার করে এসব মামলা থেকে পার পেয়ে গেছে সে।
অভিযুক্ত বাবুল মিয়া ওরফে গাঁজা বাবুল চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের মৃত মহব্বত আলীর ছেলে ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে অপরাধী হয়ে উঠা বাবুলের অতীত ও বর্তমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে। তার এসব অপকর্মের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন, স্থানীয় কামাল মিয়া ওরফে বুইট্টা কামাল, সাবেক মেম্বার দানা মিয়া, বর্তমান মেম্বার মহসিন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. বাবুল মিয়া।

পূর্ব পরিচয়: বাবুলের দাদা নিজ পরিবারসহ গ্রামের মানুষের সাথে ঝগড়াঝাঁটিতে লিপ্ত থাকতো। এসব কারণে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে পাশর্^বর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হরিপুর গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করেন। এসময় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে এসে শশুর বাড়িতে আশ্রয় নেয় বাবুলের দাদা। তৎকালীন সময় থেকেই অভাব অনটনের কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো ওই পরিবারের। পরবর্তীতে অভাবের তাড়নায় শূণ্য হাতে ঢাকায় চলে আসে বাবুলের পরিবার। তারপর থেকে তেঁজগাওয়ে বসবাস শুরু বাবুল ও তার পরিবারটির। ছোট ভাইসহ চুরি, ছিনতাই, মাদক সেবন ও বিক্রিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে বাবুল মিয়া। এভাবেই বস্তি এলাকায় গাঁজা বাবুল হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে বাবুল মিয়া।

রায়পুরার চরাঞ্চলে ফেরা: ঢাকার তেজগাঁওয়ের টোকাই বাবুল মিয়া ওরফে গাঁজা বাবুল ২০১৫ সালে চাঁনপুর এলাকায় ফিরে আসেন। এলাকায় ফিরে স্থানীয় সাংসদ রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর আর্শিবাদ নিয়ে বাগিয়ে নেন চাঁনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বাবুল আগে কখনও আওয়ামী লীগের কর্মী বা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কী না জানা নেই। দলীয় রাজনীতির বিষয়ে বাবুল নিজেই সাংবাদিকদের বলেন গ্রামে আমি নতুন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগে পদ পাওয়ার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বিগত ৪ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন বাবুল মিয়া। এক সময়কার টোকাই বাবুল এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।

অপরাধ করে কোটিপতি: এলাকায় চাঁদাবাজি, জমিদখল, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক সেবন ও বিক্রি, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সন্ত্রাসী বাবুল।

সেতু নির্মাণের নামে চাঁদাবাজি: স্থানীয়রা জানান, মেঘনার শাখা নদীতে কালিকাপুর টু বালুয়াকান্দি সেতুর অনুমোদন করাতে এক জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে ঘুষ দেওয়ার নামে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করেন বাবুল। বগডহরিয়াকান্দি ও কালিকাপুর গ্রামবাসীর নিকট থেকে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার ভিত্তিতে ২ থেকে ৬ হাজার টাকা করে মোট ১১ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এতে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন স্থানীয় কামাল মিয়া, সাবেক মেম্বার দানা মিয়া, বর্তমান মেম্বার মহসিন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. বাবুল মিয়া।
পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগের নামে চাঁদাবাজি: চাঁনপুর ইউনিয়নে দেয়া হবে ৯ হাজার বিদ্যুৎ সংযোগ। এরমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ৩ হাজার বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সংযোগের বিপরীতে সাড়ে ৪ শত থেকে সাড়ে ৮শত টাকা গ্রাহক ফি নির্ধারিত থাকলেও হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সংযোগপ্রাপ্ত ৩ হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে আদায় করা হয়েছে দেড় কোটি টাকার উপরে।

গ্রাহকদের অভিযোগ চাঁনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া ও তার সহযোগী বাবুল ডাক্তার, দানা মিয়া মেম্বার, মহসিন মেম্বার, কামাল মিয়া ওরফে বুইট্টা কামাল ও গোলাম হোসেন নিজেদের ছাপানো রশিদের মাধ্যমে আদায় করেছেন এসব চাঁদার টাকা। বাবুল ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের নির্ধারিত চাঁদার টাকা পরিশোধ না করলে দেয়া হয় না বিদ্যুৎ সংযোগ। অনেকে চাঁদার টাকা পরিশোধ করেও পাননি বিদ্যুৎ সংযোগ।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ সংযোগের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের মামলায় গ্রেফতার হয়ে এখন জামিনে আছেন বাবুল মিয়া। স্থানীয় জনসাধারণের সাথে সভা করে আলোচনার মাধ্যমেই এসব চাঁদার টাকা আদায় করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য খুটি ও মিটার আনতে এসব টাকা খরচ হয়েছে বলে এ প্রতিবেদকের নিকট স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল।

জমি দখল ও বালু উত্তোলন: চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের মেঘনা নদীর পাড়ে ৪ থেকে ৫ বিঘা জমির মালিক বাবুল নিজে। সেখানে বাংলো ও এক নেতার বাজার গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নেয় বাবুল মিয়া। এই বাংলো ও বাজার বাস্তবায়নের জন্য রেকর্ডভুক্ত খাসজমিসহ ২০/২৫ জন ব্যক্তির মালিকানাধীন ২৫ বিঘার উপরে বালু ফেলে ভরাট করে দেড় কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে নিয়েছে বাবুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে নিয়মিত ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করেন বাবুল মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বাবুল।
দাঙ্গা, হত্যা ও লুটপাট: ২০১৬ সালে বাবুলের নেতৃত্বে সৃষ্ট এক টেঁটাযুদ্ধে খুন হন কালিকাপুর গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী রহিমা মিয়া (৩৫)। এসময় লুটপাট করা হয় খুন হওয়া রহিমসহ তার সমর্থক ও আত্মীয় স্বজনের বাড়ি-ঘর, টাকা পয়সা, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ যাবতীয় মালামাল। এ টেঁটাযুদ্ধের কারণে পলাতক লোকজনের কাছ থেকে হত্যা মামলা মীমাংসার কথা বলে জোর করে আদায় করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। এছাড়াও চলতি বছর বাবুলের বালু তোলার ড্রেজারে বাধা দেয়ায় রাতের আধারে খুন হয় হান্নান মিয়া (৩৫) নামে এক জেলে। এই মামলায় বাবুল অভিযুক্ত হলেও প্রভাব বিস্তার করে পার পেয়ে যায়।

অস্ত্র দেখিয়ে ধর্ষণ: প্রবাসীদের স্ত্রী ও কুমারী মেয়েদের অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে বাবুলের বিরুদ্ধে। বাবুলের ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্ত:স্বত্ত্বা হওয়া কুমারী একাধিক মেয়ে পরিবারসহ লোকলজ্জার ভয়ে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছেন। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনসহ মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তার ছোট ভাই বাচ্চু ও আকতার ওরফে সাচ্চুর বিরুদ্ধেও। এছাড়া বাজারের চা স্টলে বসে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে লোকজনকে ভয়ভীতি দেখানো নিয়মিত কাজ আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলের।
কালিকাপুর গ্রামের কালু মিয়া, বাছির মিয়া, শহিদ মিয়া, আরিজ মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা নাসির মিয়া, আবুল খায়েরসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, বিদ্যুতের

জন্য ৫ হাজার করে টাকা নিছে। আমরা এখন পর্যন্ত মিটার পাই নাই। এলাকার মানুষ কৃষিকাজ করে কষ্ট করে চলাফেরা করে, এদের কাছ থেকে জোরজবর করে টাকা নিছে। ৫ হাজার করে টাকা না দিলে ঘরে পর্যন্ত কোপ দিসে। টাকা দিওন লাগব, না দিলে বাবুল মিয়া দেশছাড়া কইরা ফেলবো।
কালিকাপুর গ্রামের হাজী আ: রশিদ, এনামুল হক, মনির মিয়া, নবী হোসেন, হারুন মিয়া ও জিলানীসহ বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, বাবুল মিয়া সেতু নির্মাণের নামে সরকারি দপ্তরে ঘুষ দেয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৫ থেকে ৬ হাজার করে শতাধিক মানুষের নিকট থেকে ১১ লাখ টাকা আদায় করে। কিন্তু সেতুর কোন খোঁজ খবর নেই।

একই গ্রামের নূরুল ইসলাম, সেলিম মিয়া, আমেনা বেগম, আলেক মিয়া, শাহজালাল, রতন মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা বরজু মিয়ানহ বেশ কয়েকজন বলেন, ক্ষমতার দাপটে বাবুল মিয়া জমির মালিকদের কাউকে কিছু না বলেই জমিতে বালু ফেলে ভরাট করে দখল করে নিসে। এলাকা ছাড়া হওয়া ও প্রাণভয়ে কেউ আইনের আশ্রয় নেয় না।

মোহিনীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমানে ঢাকায় বসবাসকারী অবিভক্ত ঢাকা মহানগর তাঁতী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল মাহমুদ বলেন, আমি বাবুলের চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় জিডি করেছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল বলেন, স্থানীয় জনসাধারণের সাথে সভা করে আলোচনার মাধ্যমেই এসব চাঁদার টাকা আদায় করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য খুটি ও মিটার আনতে এসব টাকা খরচ হয়েছে। অন্যান্য সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। জমি দখলের প্রশ্নই আসে না, এসব জমি আমার কেনা।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, বাবুলকে আমরা বিদ্যুতের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছিলাম, এখন সে জামিনে আছে। এছাড়া মামলাটি দুদকে চলে গেছে, দুদক সেটি তদন্ত করছে। অন্যান্য বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি, পেলে সে যেই হউক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD