খায়রুল ইসলাম ভৃূইয়া | নরসিংদী প্রতিদিন –
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ :
নিজ বাসায় মাহাবুবুর রহমান নামে রেলওয়ের এক কর্মচারী খুনের ঘটনায় পুলিশ তার স্ত্রী তিন সন্তানের জননী রোকসানা আক্তার ও দেবর (নিহতের চাচাতো ভাই) শিমুলকান্দি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাসিফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের দাবি, হাসিফের সঙ্গে ভাবী রোকসানার অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ছিল। পথের কাঁটা সরাতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মাহবুবকে হত্যার আগে পায়েসের সঙ্গে প্রায় ৩০টি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৌর শহরের চন্ডিবের উত্তর পাড়ায়( কামাল সরকার বাড়ী সংলগ্ন) ২৭ নভেম্বর বুধবার গভীর রাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভৈরব থানার ওসি (তদন্ত) বাহালুল আলম খান গত রোববার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, গতকাল শনিবার সকালে সন্দেহভাজন হিসেবে হাসিফকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাসিফ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ফলে হাসিফের দেয়া তথ্য মতে,গত শনিবার রাতে বাড়ির কাছে একটি কচুক্ষেত থেকে হত্যার সময় তার পরনের রক্তমাখা শার্ট ও প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। সেকারনে গতকাল রাতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একই সঙ্গে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত মাহাবুবের স্ত্রী রোকসানাকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হাসিফের পর রোকসানাও হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানায়, মাহাবুব রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগের এসএস ফিটার পদে কর্মরত ছিলেন। প্রায় এক যুগ আগে মাহাবুব-রোকসানার দম্পতির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রয়েছে তিনটি সন্তান । সাপ্তাহিক ছুটিতে প্রতি বৃহস্পতিবার বাড়িতে আসতেন নিহত মাহবুব। কিন্তু গঠনার রাতে এক দিন আগেই বুধবার রাতে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন। রাতের আঁধারে বেডরুমে ছুরিকাঘাতে খুন হয় মাহবুব। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মাহবুবের স্ত্রী রোকসানাকে সন্দেহের তালিকায় রেখে অজ্ঞাতনামা ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাহালুল আলম খান আরও বলেন, শুরু থেকেই নিহতের স্ত্রীকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। আর মুঠোফোনের সূত্র ধরে হাসিফকে শনাক্ত করা হয়। আটকের পর হাসিফ রোকসানার সঙ্গে প্রেমের কথা স্বীকার করেন। তারা মনে করেছিলেন, মাহবুবকে সরিয়ে দিতে পারলে তাদের পথের বাধা দূর হয়ে যাবে। এরপরই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন দু’জনে। গত রবিবার কিশোরগন্ঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে বিচারক শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ঘটনায় জড়িত থাকা ও খুনের কথা স্বীকার করে বক্তব্য দেন তার স্ত্রী রোকছানা আক্তার ও তার চাচাতো ভাই হাসিফ।