নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন –
সোমবার ২০১৯ :
আজ ৯ ডিসেম্বর। শেরপুরের ‘নকলা মুক্ত দিবস’।। ১৯৭১ সনের এ দিনে মুক্তিযোদ্ধা ১১নং সাব-সেক্টর কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে টুআইসি আব্দুর রশিদ এবং সিকিউরিটি অফিসার একলিম শাহসহ প্রায় ১৫০জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নকলাকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত ঘোষণা করে স্থানীয় নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজার হাজার মুক্তিকামী জনতাসহ স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
জানা যায়,১৯৭১ সনের ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ১১নং সাব-সেক্টর কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রায় ১৫০জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেরপুরের নকলাকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করার লক্ষে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। ৮ ডিসেম্বর তারা নকলার রুনীগাঁও-গৌড়দ্বার এলাকায় অবস্থান করে নকলা থানা সদরের রাজাকার-আলবদর ক্যাম্প আক্রমণের প্রস্ততি নিতে থাকেন। ওই দিন বিকেলে কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরী জানতে পারেন লেফটেনেন্ট তাহের তার নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্বা নিয়ে নকলার পলাশকান্দি গ্রামে অবস্থান করতেছেন। সেদিন রাত ৮টায় কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরীর যোগাযোগ হয় লেফটেনেন্ট তাহেরের সাথে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাত ১০টায় একজন মুক্তিযোদ্ধার মাধ্যমে নকলা রাজাকার-আলবদর ক্যাম্পে পত্র পাঠানো হয় তাদেরকে আত্মসমর্পনের জন্য। কিন্তু নকলা রাজাকার-আলবদর ক্যাম্প থেকে পত্রের কোন উত্তর না দিয়ে আক্রমণের হুমকি স্বরূপ পত্র বাহকের নিকট একটি বুলেট পাঠায়। মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার, আল-বদর ও দালালদের উপর ভয়াবহ আক্রমণ চালাতে পারে এ ভয়ে ৯ডিসেম্বর ভোর রাতে নকলা রাজাকার-আলবদর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে ভোর ৬টায় পলাশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ওৎ পেতে থাকা কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ১১৭জন রাজাকার, আল-বদর, দালাল ও আল শামস ধরা পড়ে এবং আত্মসমর্পন করে। ওই দিন সকাল ৮টায় কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরী, লেফটেনেন্ট তাহের, ইপিআর ফরহাদ, আব্দুল আলিম ভূত সঙ্গীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নকলা থানা সদরে নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে হাজার হাজার মুক্তিকামী জনতাসহ নকলাকে পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত ঘোষণা করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্বা সংসদ নকলা উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর জানান, ৯ ডিসেম্বর নকলা মুক্ত দিবস উপলক্ষে আমরা বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সাড়ে ১০টায় জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, ১১টায় শোভাযাত্রা এবং শোভাযাত্রা শেষে রয়েছে আলোচনা সভা।