নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২০:
কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে সৌদি আরবের জেদ্দায় মর্মন্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেদ্দার হাইয়াল সামির এলাকায় তাদের বহনকারী গাড়িটিকে অপর একটি লরী ধাক্কা দিলে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজন।
নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির আউলাতৈল গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে আল-আমিন, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও এর কামাল উদ্দিনের ছেলে শাকিল মিয়া এবং নরসিংদী জেলার মনোহরদীর উত্তর কাচিকাটা গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সৌদি রেড ক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্সের জরুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহতের পরিবারিক সূত্র জানায়, তিনজনই সৌদি ইয়ামামা কোম্পানিতে পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তাদের মরদেহ জেদ্দা বাদশাহ আব্দুল আজিজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন কনস্যুলেটের আইন সহকারী হাসিব হোসেন।
নিহত শাকিল মিয়ার চাচাতো ভাই রাসেল জানান, মঙ্গলবার রাত একটার সময় তারা কাজে গিয়ে বুধবার দুপুর বারোটার সময় কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার মুহূর্তে এই দুর্ঘটনা ঘটে। শাকিল পরিবারের বড় ছেলে। দুই ভাই এক বোন শাকিল সবার বড়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন শাকিল।
রাসেল মিয়া আরও জানান, শাকিল কিছু দিন আগে ছুটি শেষ করে সৌদি আরবে এসেছে। আসার পূর্বে ব্যাংক থেকে ঋণ করে বসতঘর তৈরি করেছিল। এরই মাঝে চিরমুক্তি নিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন শাকিল।
নিহত কাওছারের মামা আজহার জানান, পিতৃহীন কাওছার ছিল পরিবারের একমাত্র সন্তান। গত তিন বছর আগে তার বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল। কাওছার ছিল পরিবারের একমাত্র সম্বল। এখন তার বিধবা মাকে দেখাশোনা করার আর কেউ রইলো না। নিহত মায়ের বাংলাদেশ সরকারের কাছে একমাত্র দাবি ছেলের লাশটি যেন দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, আইন প্রক্রিয়া শেষে অতি দ্রুত নিহতদের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।