আচ্ছা-যদি এমন হয় যে,
হঠাৎ তোমার প্রিয় কবির বই থেকে সব বর্ণ উধাও
তোমার প্রিয় বইয়ের একটি কবিতাও নেই কোথাও
তুমি কি খুব কষ্ট পাবে? মন খারাপ করবে খুব?
যদি দেখো সেই বইয়ের প্রতি পৃষ্ঠা জুড়ে শুধু আমারই নাম আমার লেখা কবিতা তোমার সাথে খুনসুঁটি করছে অবিরাম,
তুমি কি খুবই বিরক্ত হবে?নাকি আমাকে আবারো পড়তে বসবে?
আচ্ছা ধরো-
তোমার প্রিয় ডায়রির পাতার গোপন ভাঁজে রাখা গোলাপের
শুকনো পাপড়িগুলো হঠাৎই সতেজ হয়ে উঠেছে
তোমাকে ইশারায় কাছে ডাকছে,
তোমার কাছে মায়ার আদর চাচ্ছে
তোমার চোখেমুখে কি তখন চরম বিরক্তির স্ফূলিঙ্গ প্রদর্শিত হবে?
নাকি তুমিও শুনবে গোলাপের গোপন কথা?
আমার গোপন ব্যথা ও বালিশে নোনা জলের নালিশ?
তুমি যে গত অভিমানে আমার প্রেমপত্র ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে বৃষ্টির জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলে অবহেলায়
সেই চিঠির টুকরোগুলো যদি সটান হয়ে তোমার সামনে এসে দাঁড়ায়
যদিও চিঠির প্রতিটি লাইনে ভুল বানানের আধিপত্য,
বাঁকা লাইন ও বিশ্রীরকম হাতের লেখায় মায়া লেগেছিলো!
তুমি কি সেই ভুল বানানের জন্য আমাকে দন্ড দিবে?
চিঠিতে বাঁকা লাইন ও বিশ্রীরকম হাতের লেখার জন্য আমাকে প্রত্যাখান করে দিবে?
নাকি ভীরু হাতে তুলে নিবে সেই চিঠি
বুকের গোপন ভাঁজে রেখে দিবে সযতনে
বারবার আড়ালে আবডালে পড়বে সেই চিঠি
আমাকেই পড়বে তুমি লজ্জায় আর ভয়ে?
যদি আমাদের প্রথম স্পর্শ, প্রথম আলিঙ্গন
তোমার সামনে এসে দু'হাত বাড়িয়ে বলে,'হাত দুটো ধরো।'
তখন কি অস্বীকার করবে সেই স্পর্শ ও আলিঙ্গনের কথা?
অথবা আলিঙ্গন আর স্পর্শকে তোমাকে উত্যক্ত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সশস্ত্র হাতে তুলে দিবে?
নাকি তুমিও হাত বাড়িয়ে বুকে জড়িয়ে নিবে আমায়?
তুমি চলে যাবার পর আমি এমনই দোটানায় থাকি সবসময়
দ্বিধাগ্রস্ত মনের ক্যানভাসে আঁকা ছবিগুলো বিবর্ণ হয়ে যায়
তবুও আমি চাই তুমি শুধু আমাকে পড়ো,প্রিয় গল্প কবিতায়
তুমি শুধু আমার জন্য গোলাপ হাতে দরজায় কড়া নাড়ো
তুমি শুধু আমাকেই স্পর্শ করো,আমৃত্যু আলিঙ্গন করো।
আমি জানি আমার এ চাওয়াগুলো শুধুমাত্র কথার কথা
তবুও হাসিমুখে লালন করি আমারই গোপন যতো ব্যথা।
কবি রফিকুল নাজিম | নরসিংদী প্রতিদিন - রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ :