নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বুধবার-২৫ মার্চ ২০২০:
নরসিংদীতে বুধবার (২৫ মার্চ) পর্যন্ত ৫৬৬ জন বিদেশ ফেরতকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আর হোম কোয়ারেন্টিন শেষে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৭৭ জনকে। এরপরও কেউ স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে না গেলে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ইতোমধ্যে এই নির্দেশনা না মানার কারণে ইতালী ফেরত একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও আরেকজনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে দেশে এখনো যারা হোম কোয়ারেন্টিনে যাচ্ছেন না তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার জন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের খোঁজে বের করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। এছাড়া নরসিংদীতে ইতিমধ্যে ৪টি নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও দেশের অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন।
করোনাভাইরাস বাংলাদেশে সংক্রমিত হচ্ছে এবং নরসিংদী জেলায়ও সংক্রমণের আশংকা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলার বর্তমান অবস্থা ও প্রশাসনের পদক্ষেপ সমূহ জানাতে বুধবার (২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন জেলা প্রশাসক।
সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী জেলার টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের জেলা প্রশাসক জানান, নরসিংদীতে করোনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলার খাদ্য, কাঁচামাল, হাসপাতাল ও জরুরী সেবা ছাড়া সকল কিছুই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ৫০টির মতো মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা সহ একজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিনিয়তই জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম বাজার মনিটরিং করছে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে কিছু দোকানপাট খোলা থাকলেও রাস্তায় যানবাহনসহ জনগণের চলাচল কমে গেছে। এসময় করোনা ভাইরাস নিয়ে কোন প্রকার ভুল তথ্য পরিবেশন না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, নরসিংদীতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলার প্রায় ২২ লক্ষ লোকের জন্য ১৭শ পুলিশের সমন্বয়ে ৪৫টি টিম দৈনিক জেলার বিভিন্ন হাট বাজার রাস্তাঘাট টহল দিচ্ছে। এছাড়া যারা বিদেশ থেকে দেশে এসেও কোয়ারেন্টিনে যাচ্ছে না তাদের তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, নরসিংদীতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তার জন্য বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি আইসোলেশন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা ও সদর হাসপাতালেও আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আর চিকিৎসকদের জন্য দুই শতাধিক পিপিই পাওয়া গেছে, আরো কিছু আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে লে: কর্ণেল সালাম এর নেতৃত্বে ৯ম পদাতিক ডিভিশনের সেনা বাহিনীর একটি দল নরসিংদীতে কাজ করছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ইমার্জেন্সী সেলের আহবায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরুল কায়েস ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম মিত্র বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাখন দাস, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জেলা প্রশাসক। সবশেষে দেশের বর্তমান অবস্থার উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।