নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
বৃহস্পতিবার,২৬ মার্চ ২০২০:
সম্প্রতি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম শেয়ালদহ এলাকায় শিশুদের মাঝে ব্যাপক হারে নিউমনিয়া ছড়িয়ে পড়ে। গত কয়দিনে সাজেকের দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক। তার মধ্যে ৮টি ত্রিপুরা শিশু প্রাণ হারায়।
বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নজরে আসলে বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেলে হেলিকপ্টারযোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৫ জন নিউমনিয়ায়
আক্রান্ত শিশুদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
শিশুরা হল- প্রতিল ত্রিপুরা (৫), রোকেন্দ্র ত্রিপুরা (৬), রোকেদ্র ত্রিপুরা (৮), নহেন্দ্র ত্রিপুরা (১০) ও দিপায়ন ত্রিপুরা (১৩)।
এ বিষয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, গত কয়দিনে সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার অরুন পাড়া, লুথিয়ান পাড়া ও কমলাপুরপাড়া গ্রামে হাম রোগ বিশেষ করে শিশুদের মাঝে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৮টি ত্রিপুরা শিশু প্রাণ হারিয়েছে। আক্রান্ত আরো শতাধিক মানুষদের উন্নত চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার জন্য গত ২৪ মার্চ বেসামরিক ও সামরিক চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চিকিৎসক দল সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিমান বাহিনী হেলিকপ্টারযোগে শেয়ালদহ এলাকায় প্রেরণ করা হয়।
তিনি জানান, সমন্বিত চিকিৎসক দল ওই এলাকায় একটি পরিবারের ৫ জন অপুষ্টি জনিত রোগসহ নিউমনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পান এবং শিশুদের জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে আসে।
বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান জিওসি।
সাজেকের শেয়ালদহ লোকালয় থেকে অত্যন্ত দূরবর্তী এবং দুর্গমতার কারণে সামাজিক সুযোগ-সুবিধার অনেক কিছুই অনুপস্থিত। সেখানে এই অসুস্থ উপজাতিদের উন্নত চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার জন্য দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে দেবদূতের মত সেনাবাহিনীর এমন ছুটে আসা ছিল ওই এলাকার সকলের কাছে অকল্পনীয়। সামরিক বাহিনীর এমন মহানুভবতায় দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় মানুষের মাঝে নেমে এসেছে প্রশান্তির ছায়া।
হেলিকপ্টারযোগে দুঃস্থ রোগীদের স্থানান্তরের পাশাপাশি অন্যান্য আক্রান্ত রোগীদের সেবা শুশ্রুষায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে সেনা ও বেসামরিক চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসক দল।