নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার টুবগী গ্রামের কৃষকের স্ত্রী তাছলিমা বেগম। কৃষিকাজের সামান্য আয়ে কোনরকম টেনেটুনে চলে তাদের চার সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর সংসার। স্বামীর এই সামান্য আয় দিয়েই সংসার চালিয়ে চার সন্তানের মধ্যে ২জন ছেলেকে কোরআনে হাফেজ বানিয়েছেন আরেকজন হাফেজ হওয়ার পথে। একমাত্র মেয়ে মহিলা মাদ্রাসায় পড়ছে। এরই মধ্যে ধরা পড়ে তাছলিমা বেগমের দুটি কিডনিই বিকল। গত ৫ বছর ধরেই চলছে তার চিকিৎসা। ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে চলছে তার কিডনির কাজ। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসায় অপারগ হয়ে মাকে বাঁচানোর জন্য দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চেয়ে গতবছরের মার্চে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন তাছলিমা বেগমের ছেলে হাফেজ তাইমুল ইসলাম। এর প্রেক্ষিতে একজন বিত্তবানের সহযোগিতায় এতোদিন ডায়ালাইসিস চলেছে। গত দুই মাস ধরে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে মানা করে দেয়ায় তাদের ভাগ্যে আবার ঘোর অমানিশার অন্ধকার নেমে আসে বলে নরসিংদী প্রতিদিনকে জানান হাফেজ তাইমুল।
পাঠকদের উদ্দেশ্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
“আসসালামু আলাইকুম। আমি হাফেজ তাইমুল ইসলাম। আমার বাসা চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার টুবগী গ্রামে। আমার মায়ের নাম তাছলিমা বেগম, বাবা বায়েজীদ হোসেন। খুবই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার বেড়ে উঠা। বাবা কৃষক। অন্যের জমিতে চাষ করে সংসার চালায়।কখনো তিনবেলা খেয়ে কখনো বা না খেয়েই দিন কাটাতে হয়। আমরা চার ভাই বোন। বাবা মার ইচ্ছে ছিল সবাইকে হাফেজ বানাবে। তাই ছোট থেকেই মাদ্রাসায় পড়ি। সংসারের অভাবের কথা নাই বা বলি। হয়ত সব উপরওয়ালার পরীক্ষা। আল্লাহর রহমতে আর আপনাদের দোয়ায় আমি এবং আমার ছোট ভাই হাফেজ।বোন মহিলা মাদ্রাসায় পড়ে, একদম ছোট ভাইও মাদ্রাসায় পড়ে। আপনাদের দোয়া থাকলে তারাও হাফেজ হবে ইনশাআল্লাহ।
আমার পারিবারিক অবস্থা খুবই নাজুক। যত অভাবেই কাটকু এ নিয়ে কখনো আমাদের কোন আক্ষেপ ছিলোনা। কেননা দুনিয়া একটা পরীক্ষাক্ষেত্র। আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন। ফলাফল পরকালে পাওয়া যাবে। যতো যাই হোক কখনো আল্লাহর রাস্তা থেকে সরে আসিনি।
আপনাদের কাছে একটা মানবিক আবেদন নিয়ে এসেছি। আজ চার বছর যাবৎ আম্মুর দুইটা কিডনি নষ্ট, প্রতি সপ্তাহে দুইদিন কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হয়, তাও আবার চাঁদপুর একটা প্রাইভেট হাসপাতালে ।অনেক গুলো টাকা খরচ হয়। একটা ডায়ালাইসিস বিল ৪ হাজার টাকা,আসা-যাওয়া,মেডিসিন সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। এমনভাবে প্রতি সপ্তাহে দশহাজার টাকা,মাসে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার। আমার গরীব পরিবারের পক্ষে কোনভাবেই এই টাকা জোগাড় করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না। নিজেদের যা ছিলো সব ইতিমধ্যে শেষ। নিঃস্ব হওয়ার পথে আমরা। তবুও চাই আমার আম্মু বেঁচে থাকুক। নিজেদের সব শেষ করে আর কোন উপায় না পেয়ে আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি। প্লিজ সবাই আমার মায়ের পাশে দাঁড়ান। যার যতটুকুই সামর্থ আছে আমাদের সাহায্য করুন, আমার মা কে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। দোয়া করুন আমার মায়ের জন্য। নিজে সাহায্য করতে না পারলেও পোস্ট টি শেয়ার করে অন্য কাউকে সাহায্য করতে বলুন। মানুষ তো মানুষের জন্যেই। কত মানুষ দেখি ক্যান্সারে ভুগে লাখ লাখ টাকার দরকার হলে ফেইসবুকে সাহায্য চায়, আপনারা পাশে দাঁড়ান বলেই তো গরীব, অসহায় মানুষগুলো বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারে। আমি কোন রাত ঘুমোতে পারিনা, শুধু মনে হয় এই বুঝি মা নেই! নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে, চাপা কষ্ট হয় বুকে, চোখে জল আসে। মাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো,বাড়িতে গিয়ে কার মুখ দেখে দিন শুরু করব ভাবতেও পারিনা। ভালোবাসি মাকে।অনেক ভালোবাসি। সবার সাহায্য কামনা করছি। আল্লাহ সকল মাকে, সকল সৃষ্টিকে সুস্থ্য রাখুন।
ধন্যবাদ।
আমাদের কাছে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা :
তাছলিমা বেগম
হিসাব নংঃ ০২০০০১১৬২১৭৮৭
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
ফরক্কাবাদ শাখা, চাঁদপুর।
বিকাশে পাঠাতে চাইলে নিচের নম্বরে পাঠাতে পারেন-
01872075664 (পারসোনাল)
বিনীত-
হাফেজ মোঃ তাইমুল ইসলাম
চাঁদপুর। 01872075664”