নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার,০৫ এপ্রিল ২০২০:
বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন ৪টিসহ মোট ৫টি প্যাকেজে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে সরকার। রবিবার (৫ এপ্রিল) সকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, শুধু বাংলাদেশ না সমগ্র বিশ্বব্যাপী আজকে একটা বিরাট সমস্যা দেখা গেছে। বলতে গেল বৈশ্বিক একটা মহামারি দেখা গিয়েছে। নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আজকে সমগ্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে এটিকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০২টি দেশ ও অঞ্চলে এই সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশ্বে প্রতিদিন ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে এবং ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে এটুকু আশার বাণী যে, সুস্থতার লক্ষণ খুব বেশি, সুস্থ মানুষ বেশি হচ্ছে আমরা দেখছি। কাজেই এখানে খুব বেশি একটা ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে আমি মনে করি, সকলে যদি নিজেদেরকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যসম্মত নির্দেশনা মেনে চলেন তাহলে খুব দ্রুত সুস্থতা লাভ করা যেতে পারে।’
‘আমরা বাংলাদেশ সময়মতো এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যার ফলে আল্লাহর রহমতে ব্যাপক সংক্রামণ ঘটেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে’- যোগ করেন সরকারপ্রধান।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, সাংবাদিক সম্মেলন করলে আমরা আপনাদেরকে ডাকি, সবার সঙ্গে বসি, কথা বলি, মত বিনিময় করি। কিন্তু আজকে একটু ব্যক্তিক্রমধর্মী ব্যবস্থা আমরা নিয়েছে এই কারণেই যে, আমি চাই না আপনারা ঘুরাঘুরি করতে যেয়ে কোনও ধরনের সংক্রামিত হন। তাই আমি সরাসরি টেলিভিশনের মাধ্যমে বার্তাগুলো পৌঁছে দিচ্ছি। হয়তো প্রশ্নোত্তর এখন দিতে পারবো না। তবে ভবিষ্যতে যখন একটু ভালো সময় আসবে আপনাদেরকে গণভবনে দাওয়াত দেবো। তখন আপনারা মন ভরে প্রশ্ন করতে পারবেন, উত্তর দিতে পারবো। সে ব্যবস্থাটাও আমরা নেবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আজকে কতগুলি কারণেই এখানে উপস্থিত হয়েছি। আপনারা জানেন যে, এই যে সংক্রামণটা দেখা দিয়েছে এটা গতবছর চীনে দেখা দেয় প্রথম। চীনে করোনা ভাইরাস দেখা দেয়ার পরপরই আমরা এ বিষয়টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা ও আইইডিসিআর যৌথভাবে কাজ শুরু করে। আইইডিসিআরের কন্ট্রোলরুম খোলা হয় এবং রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পৃথক পৃথক কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পরিচালনা করা হচ্ছে।’
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ভাইরাসসহ সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে ‘ন্যাশনাল প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান ফর কোভিড-১৯ বাংলাদেশ’ প্রণয়ন করা হয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় তিন স্তর বিশিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।’