রকমারি ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজেশ চৌহান (২৬) কাজ করেন দুই হাজার কিলোমিটার দূরে বেঙ্গালুরু শহরে। দেশটিতে লকডাউন ঘোষণার পর তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে, যানবাহন বন্ধ থাকায় রাজেশ নিরুপায় হয়ে হেঁটেই বাড়ির পথে রওনা দেন! শেষ পর্যন্ত ১০ দিনে এই অসাধ্য সাধন করেন রাজেশ।
খবরে বলা হয়, পায়ে হেঁটে রওনা দেওয়ার সময় তার পরিকল্পনা ছিল সুযোগ হলে ট্রাকে করেও কিছু পথ পাড়ি দেবেন। দু-একজন ট্রাকচালকের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। কিন্তু তারা যে ভাড়া চেয়েছিল সেই পরিমাণ পয়সা তার কাছে ছিল না। অগত্যা নিজের পায়ের ওপরই ভরসা করতে হয়েছে তাকে। আর এই ১০ দিনের যাত্রায় শুধু বিস্কুট আর চা খেয়েই বাঁচতে হয়েছে। অনেক জায়গায় পুলিশের চেকপোস্টের কারণেও ঝামেলায় পড়তে হয়েছে তাকে।
প্রথম পাঁচ দিনে রাজেশ পায়ে হেঁটে এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেন। এই পাঁচ দিনেই তার পা ফুলে ওঠে, ফোসকা পড়ে অনেক জায়গায়।
নেপাল সীমান্তে ত্রিভুবন নগরে যখন থাকতেন তখন রাজেশের আয় ছিল দৈনিক ২৫০ রুপি; এই আয়কে দ্বিগুণ করতেই গত ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতে একটি নির্মাণ কোম্পানিতে চাকরি নেন। বেঙ্গালুরু থেকে সব থেকে কম ভাড়ার গাড়িতে তার বাড়িতে যেতে সাধারণত ৩০০ রুপির দরকার হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে যখন তা ১ হাজার ২০০ রুপি হয়ে গেল তখন যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে রাজেশের। এরপর গ্রামের কয়েকজন মিলে সিদ্ধান্ত নেন পায়ে হেঁটেই রওনা দেবেন বাড়ির পথে।
১২ মে চারটি জামা, একটি তোয়ালে, একটি বিছানার চাদর, কয়েক বোতল পানি এবং মানিব্যাগে ১৭০ রুপি নিয়ে বাড়ির পথে পা রাখে রাজেশ। ১০ দিনের এই অমানুষিক যাত্রা শেষে বাড়ি ফিরে সন্তানদের কোলে তুলে নিতেই সব কষ্ট ভুলে যান রাজেশ। যদিও এরপর ১৪ দিনের জন্য একটি সেন্টারে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে তাকে।