মোঃ আব্দুল কাদির | রায়পুরা প্রতিনিধি
-রবিবার-১৪ জুন ২০২০: নরসিংদীর রায়পুরায় দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে নয়জন আহত হয়েছে। এতে চারটি ঘরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৩ জুন) রাত ১১টায় উপজেলার আদিয়াবাদ পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান আদিয়াবাদ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ও ইউপি সদস্যরা।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়,পাচঁ বছর আগে আদিয়াবাদ পূর্বপাড়ার মোহাম্মদ আলীর প্রবাসি ছেলে নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের মেয়ে শাহিনুরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শাহিনুর একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নাজিম উদ্দিনের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এঘটনায় প্রথম স্বামী তাকে ডির্ভোস দেয়। পরে প্রেমিক নাজিমকে বিয়ে করেন শাহিনুর। পরিবারের অমতে বিয়ে করায় নাজিমের বাবা এ সর্ম্পক মেনে নেননি। তারপর থেকে শাহিনুর তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর নাজিম তার স্ত্রী শাহিনুরের কাছে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না পেয়ে নাজিম প্রায় শাহিনুরকে শারীরিক নির্যাতন করত। এনিয়ে শাহিনুর তার স্বামীর বিরুদ্ধে নরসিংদী কোর্টে মামলা করেন। মামলার পর শাহিনুরের ওপর নাজিম আরো ক্ষিপ্ত হন। এরই মধ্যে স্থানীয় আঙুর মিয়ার দোকান থেকে সিগারেট চুরির দায় নাজিমের বাড়ির লোকজন শাহিনুরের চাচাতো ভাই শের আলীর ওপর চাপিয়ে দেয়। এনিয়ে গতরাতে দুই পরিবারের লোকজন দা, ছুরি, বল্লম ও লাঠি নিয়ে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে শাহিনুরের বাড়ির তিনজন ও নাজিমের বাড়ির ছয়জন আহত হয়।
আহতরা হলো,শাহিনুরের মা সুফিয়া বেগম (৫৫), চাচা রাজু মিয়া (৪০),চাচাতো ভাই শের আলী (২৫)। নাজিমের বাড়ির, আব্দুল হাসেমের ছেলে আলী হোসেন (৩৫),আঙুর মিয়ার ছেলে শিপন (২৭),খোরশেদ মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩০),কাবিল মিয়ার ছেলে রফিকুল মিয়া (২৬),আব্দুল মন্নানের ছেলে জলিল মিয়া (৩৫),আলমাছ মিয়ার ছেলে ইদ্রিস আলী (৫৫)। আহতদের মধ্যে আল আমিন, আলী হোসেন ও শিপনকে রক্তাক্ত জঘম অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজন বলে জানান স্বজনরা। আর বাকিরা চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এব্যাপারে শাহিনুর বলেন,যৌতুক না পেয়ে নাজিম তার বাড়ির লোকজন নিয়ে রাতে বাবার বাড়িতে হামলা চালিয়ে মা, চাচা চাচাতো ভাইকে আহত করে এবং বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়।
এব্যাপারে আলমাছ মিয়া বলেন,স্থানীয় আঙুর মিয়ার দোকান থেকে সিগারেট চুরি করে শের আলী। এনিয়ে আমাদের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে শের আলীর কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে রাতে তাঁরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
এব্যাপারে আমিরগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় দুটি পক্ষের কেউ থানায় অভিযোগ দেননি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।