আমি জঙ্গল ফুল,
রাত্রিচরী হয়ে হয় মোর প্রস্ফুটন,
কাঁটাবনে ছড়াই ঋতুর যৌবন,
আমার জঙ্গলেই বাঁচন-মরণ।
আমারে লয়ে কেউ দেখে না স্বপন,
কারও প্রেমে করি না বন্ধী নয়ন।
কোন সন্ধ্যায় গৃহফিরত চাষাও-
আমারে লয়না গামছার গোছায়।
রাতের আঁধারে ফোটি শুভ্রতায়,
আমি জংলী তাই প্রেম বুঝি নাই!
গৃহিনীর হাসি কিনে এক আঁটি ধানে,
সে কৃষক পুষ্প প্রেমের কি বুঝে?
সে তো বুঝে ঘামের যন্ত্রনা, সন্তান কান্না,
বধূয়ার নাকের ফুলের অভাবের ভাষা।
আমি দেখেছি কত কৃষাণী রোজ এই পথে,
দ্রুত পায়ে চলে গেছে বন কাঁটা মারিয়ে।
সন্ধ্যায় প্রদীপ্ত হয়নি কত কাল কত চোখ,
আমি জঙ্গল ফুল দেখেছি অনাহারী মুখ।
আমি ল্যাংটী পড়া শিশুর খেলায় মেতে,
এই জঙ্গল ছেড়ে চলে গেছি কত দূরে।
উঁকি দিয়ে দেখেছি কৃষাণীর শূন্য হাড়ি,
কি ছলনায় থামায় শিশুর বাড়াবাড়ি!
কি অসহায় গামছা কাঁধের বিষণ্ণ আঁখি!
সুন্দর হে পদ নাচনে ধান শুকাবার ছবি।
গোলা ভরা ধান আসুক চাষীর বাড়ি,
আমি গ্রাম বাংলার জঙ্গল ফুল জংলী।