আন্তর্জাতিক ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শনিবার ০৪ জুলাই ২০২০:
করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু আর শোকের মাতম চলছে। অদৃশ্য এই করোনা ভাইরাসের উপসর্গ মুহুর্মূহু রূপ বদলাচ্ছে। রূপ বদলে নতুন কোনও স্ট্রেন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এরই সাথে চারদিকে অনেকটা থেমে থেমে আতঙ্ক বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি গত ২ জুলাই এ নিয়ে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, চীনের উহানে যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তারচেয়েও ভিন্ন আরেক করোনা ভাইরাসের স্ট্রেনে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইতালি।
ড. ফাউসি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের এই দুই স্ট্রেনের মধ্যে পার্থক্য হলো- ইতালির স্ট্রেনটি ব্যস্তি থেকে ব্যক্তির মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকীকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ভাইরাসটি আরও ভয়ঙ্করভাবে চরিত্র বদলেছে। এটি আরও বেশি মানুষকে দ্রুত সংক্রমিত করতে পারে।’
যেকোনও ভাইরাসই প্রাকৃতিকভাবে রূপ ও স্বভাব বদলায়। বিজ্ঞানীরা বরাবরই বলে এসেছেন, তারা করোনার ছোটখাটো মিউটেশন পর্যবেক্ষণ করেছেন। যা থেকে রোগের বিস্তার বা রোগের সৃষ্টির ক্ষমতা খুব বেশি প্রভাবিত হয় না। তবে গত মাসের ফ্লোরিডার স্ক্রিপস রিসার্চ সেন্টারের ভাইরোলজিস্টরা সম্ভাব্য মিউটেশনের বিষয়ে সতর্ক করে বলেছিলেন, মিউটেশন ভাইরাল ট্রান্সমিশন বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। বর্তমানে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৬৮ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৬৮ হাজার ৪৮ জন। তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, প্রতিদিনই প্রায় সমান তালে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার মতো কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। কয়েক দফা ছুটি বাড়িয়ে তা ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ ছিল। ৩০ মে’র পর সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলতে শুরু করেছে। তবে এখনও দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
গেল ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বে এ পর্যন্ত নভেল করোনা ভাইরাসে ১ কোটি ১১ লাখ ৯৮ হাজার ২০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫ লাখ ২৯ হাজার ২১২ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৬৩ লাখ ৪৫ হাজার ২৩০ জন। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।