ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন-
রবিবার,১২ জুলাই ২০২০:
প্রতিটি ঈদকে ঘিরেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে ব্যবসা-বাণিজ্য। বিশেষ করে ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদে সবচেয়ে বেশি জমজমাট হয়ে ওঠে গরুর বাজার। এই ঈদকে সামনে রেখে সারা বছর গরু মোটা-তাজাকরণে ব্যস্ত থাকেন খামারিরা। ফলও পেয়েছেন ভালো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ত্রিমুখী শঙ্কা ঘিরে ধরেছে তাদের।
মহামারী করোনায় বাজার বসবে কি-না? বাজার বসলেও করোনার ক্রান্তিকালে সঠিক দাম পাওয়া যাবে কি-না? আর প্রতি বছরের মতো এ বছরও গলার কাটা হয়ে দাঁড়াবে কি ভারতীয় গরু? এমন তিন প্রশ্নে দিশেহারা খামারিরা। সেইসাথে গরুর হাটে করোনা সংক্রামণের ভয়ও কাজ করছে তাদের মনে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, পশুর হাট বসানো নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, এ বছর হবিগঞ্জ জেলায় প্রায় আড়াই হাজার খামারে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য লালন-পালন করা হচ্ছে। দেশীয় পদ্ধতিতে হাওরের ও পাহাড়ের সবুজ ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে এসব গরু-ছাগলকে। যে কারণে ক্রেতাদের কাছে দেশীয় এসব গরুর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
এ বছর জেলায় ৩৫ হাজার গরু, ১৯৬টি মহিষ, ৭ হাজার ছাগল ও ৩ হাজার ৭৬৬টি ভেড়া কোরবানির পশু হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর চেয়ে বেশি পশু বাজারে উঠবে বলে আশা করছেন তারা।
খামারের মালিক তাজুল ইসলাম জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে কোন প্রকার মেডিসিন ছাড়া তার খামারে প্রায় ৫০টি পশু লালন-পালন করছেন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ভালো দামের আশায় রয়েছেন তিনি।
একইসাথে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, করোনার কারণে এবারের ঈদে কোরবানির পশু বিক্রি কমে যেতে পারে। কারণ অনেকেই কর্মহীন দিন যাপন করছেন।
খামারি কাজল মিয়া বলেন, করোনার কারণে বাজার বসা নিয়ে দুশ্চিন্তাতো আছেই। এর মধ্যে প্রতি বছর ভারতীয় গরু এসে আমাদের লোকসানের মুখে ফেলে দেয়। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবো, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন গরুর হাট বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি ভারতীয় গরু যেন না আসে সেদিকে লক্ষ রাখা হয়।
খামারি আলমগীর হোসেন তালুকদার বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ বছর গরুগুলোর স্বাস্থ্য ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে বিভিন্ন দুশ্চিন্তায় আছি। একদিকে গরুর বাজার বসবে কি-না, আবার বসলেও দাম কেমন হবে এ নিয়ে দ্বিধা আছে। অন্যদিকে ভারতীয় গরু প্রতি বছরই আমাদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়ায়। এসব সমস্যার কারণে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসক নিয়াজ আহমেদ খান চৌধুরী বলেন, গরু মোটাতাজা করতে খামারিদের সার্বক্ষণিক সেবা দেয়া হচ্ছে। সেইসাথে প্রতিটি কোরবানির হাটে গরুর চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম থাকবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস জানান, গরুর হাট বসা নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দ্রুতই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা করা হবে। করোনার কথা মাথায় রেখে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই হাটগুলো বসানো হবে। এছাড়া এবারের ঈদে ভারতীয় কোন পশু আসবে না বলেও জানান তিনি। কোরবানির পশু নিয়ে ত্রিমুখী শঙ্কায় খামারিরা।