মোঃ আব্দুল কাদির | রায়পুরা প্রতিনিধি
-সোমবার-২৭ জুলাই ২০২০: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ পূর্বপাড়ায় গত ২৩ জুলাই শশুরবাড়িতে হাবিবা আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজন মৃত্যু হয়। রবিবার (২৬ জুলাই) সকালে আমিরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন হাসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন,নিহত হাবিবার বাবা জাকির হোসেন, বোন জাকিয়া আক্তার,চাচাতো ভাই আমির হোসেন,হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহেদা বেগম, করিমগঞ্জ গ্রামের সমাজসেবক আনোয়ারুল ইসলাম। বক্তারা বলেন, হাবিবা যৌতুকের বলি হয়েছেন। তার স্বামী ট্রলিচালক মো. সাকিব মিয়ার অমানবিক নির্যাতনে হাবিবা মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সাকিবের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়,নিহত হাবিবা একই ইউনিয়নের করিমগঞ্জ নয়াহাটির ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেনের মেয়ে। তিনি হাসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় সাকিবের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। গত আট মাস আগে পরিবারে অমতে দুজন বিয়ে করেন। হাবিবার বাবা বাদে দুই পরিবারে সবাই তাদের বিয়ে মেনে নেয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সাকিবকে আট লাখ টাকা দেন হাবিবার পরিবার। সেই টাকায় একটি ট্রলি কিনেন সাকিব। গত ২০ জুলাই আবারও যৌতুকের দাবিতে স্বামী তাকে মেরে বাপের বাড়ি পাঠায়। সেখানে দুইদিন থাকার পর হাবিবার মা ও একবোন তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে শশুরবাড়ি পাঠায়।
গত ২৩ জুলাই বিকালে ছেলের বাড়ির লোকজন মেয়ের পরিবারকে জানায় হাবিবা আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে হাবিবার মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনরা এসে দেখতে পান শোবার ঘরের চৌকির ওপর তার নিথর দেহটি রাখা আছে। এদিকে হাবিবার মৃত্যুর পর তার শশুরবাড়ির লোকজন থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। সেই সাথে গৃহবধূর শশুরবাড়ির লোকজন আত্মগোপনে চলে যান।
আমিরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রিয়াজ উদ্দিন জানায়, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। গৃহবধূর শশুরবাড়ির অভিযোগ আত্মহত্যা অপরদিকে বাপের বাড়ির অভিযোগ যৌতুকের জন্য হত্যা। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।