ভুয়া জমির মালিক সেজে দীর্ঘদিন ধরে সহজ-সরল নিরীহ মানুষের কাছে জমি বিক্রির কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চান মিয়া ওরফে আসলাম খান (৫০), আবু সাঈদ ওরফে শাহিন (৪৬), মাহরুজা নিপা (৫৭), সোহেল মিয়া (৪০), লুৎফর রহমান (৫২) ও আলী হায়দার (৫৯)।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) পুলিশ সুপার মো. জিসান এই তথ্য নিশ্চিত করে করেছেন।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের মধ্যে একজন জমির মালিক সেজে অভিনব পন্থায় সহযোগী দালালদের মাধ্যমে ক্রেতা ঠিক করে তা বিক্রির করার কথা বলে মানুষজনকে প্রতারিত করতো। প্রতারকদের গ্রেফতারের আগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিআইডি ঢাকা মেট্রো-পূর্ব এর একটি টিম দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, মাহরুজা নিপা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের গ্রুপ লিডার এবং তার নেতৃত্বে চাঁন মিয়া ওরফে আসলাম জমির মালিক সাজেন। মো. আবু সাঈদ ওরফে শাহিন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া মো. সোহেল মিয়া নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে ভুয়া বায়না দলিল প্রস্তুত করেন। অপর আসামি মো. লুৎফর রহমান ও মো. আলী হায়দার জমি বিক্রির মিডিয়াম্যান হিসাবে কাজ করেন।
এই চক্রটির শিকার খোরশেদ আলম চৌধুরীকে কেরাণীগঞ্জের একটি জমি স্বল্পমূল্যে বিক্রির কথা বলে প্রতারক চক্রটি। তাকে ৪৪ শতাংশের একটি জমি দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে উপস্থাপন করে।
তিনি জানান, প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে কেরাণীগঞ্জের জমিটি ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেন খোরশেদ আলম চৌধুরী। আসামিদের কথামতো গুলশান সিএফসিতে তাদের নগদ ৩০ লাখ টাকা দিলে প্রতারকচক্র তিনশ’ টাকার নন-জুডিশিয়্যাল স্ট্যাম্পে বায়না নামা দলিল সম্পাদন করে দেয়।
সিআইডির এ কর্মকর্তা আরও জানান, এরপর প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নগদ ও এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ৫৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপন করে। প্রতারক মাহরুজা নিপা আত্মসাতকৃত টাকা তার চক্রের সদস্যদের মধ্যে কাজের ধরণ অনুযায়ী ভাগ করে দেন। বেশির ভাগ টাকা নিজেই নেন। পরে এই চক্রটি যোগাযোগের মাধ্যম পরিবর্তন করে ফেলে।
গুলশান থানায় করা মামলটি বর্তমানে সিআইডির তদন্তধীন। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ও আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের জন্য সিআইডি টিমের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান।