নরসিংদী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স তাহমিনা সুলতানা শিমুকে (৩২) গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। বুধবার (৭ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে চিনিশপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার এক ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তাহমিনা বেলাব উপজেলার বাজনাব ইউনিয়নের হাড়িসাংগান গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. সুলতান উদ্দিনের মেয়ে। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. আলাউদ্দিন মিঠু বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, ২০১৩ সালে তাহমিনা সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকুরি নেন। তাঁরপর ২০১৪ পার্শ্ববর্তী পাটুলী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে রুহুল আমিন মুরাদের সঙ্গে তাহমিনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে টাকার জন্য স্বামী, শ্বশর, শ্বাশুড়িসহ পারিবারের লোকজন শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে। এঘটনায় একবার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে একবছর আলাদা থাকেন তাহমিনা। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের সমঝোতায় সংসার শুরু করলেও টাকার জন্য চাপ কমেনি। এরইমধ্যে সম্প্রতি শ্বশুরকে একটি মোটর সাইকেল কিনে দেন, শ্বাশুড়িকে চিকিৎসা করান। তারপরও গত বুধবার রাতে তাকে গলাটিপে হত্যা করেন স্বামী রুহুল আমিন। খবর পেয়ে নিহত তাহমিনার আপন খালা পারুল আফ্রাদ অচেতন অবস্থায় বাড়ি থেকে উদ্ধার নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃবরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের বড় ভাই আলাউদ্দিন মিঠু বলেন, সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল। গত ২১ সেপ্টেম্বর নরসিংদী সদর হাসপাতালে যোগদান করে গত ২ অক্টোবর নরসিংদীর বাসায় উঠে। তাঁর শ্বশুর শ্বাশুড়ি সবসময় টাকার জন্য নির্যাতন করত। এবার তাকে মেরেই ফেলল।
নিহতের বড় বোন সাদিকুন নাহার রিপা বলেন, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মোবাইলে আমার সঙ্গে শিমুর কথা হয়। সে জানায়, সন্ধ্যা সময়ও শ্বশুর তাঁর স্বামী মুরাদের মোবাইলে ফোন করে টাকার জন্য চাপ দেয়। আর রাতেই তাকে হত্যা করা হল।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্যে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে হত্যার আলামত হিসেবে গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এঘটনায় নিহতের বড়ভাই আলাউদ্দিন মিঠু বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে।