প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় ফিরে অপলক নয়নে পথের দিকে তাকিয়ে থাকেন নিখোঁজ মেয়ের ফেরার আশায়। প্রতিদিই ভাবেন এই বুঝি মেয়ে ফিরে এলো। কিন্তু অপেক্ষার পহর যেন শেষ হচ্ছে না সোহাগীর মা-বাবার। দীর্ঘ ৫ বছর পূর্বে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী পৌর শহরের মনোহরপুর মহলা থেকে নিখোঁজ হয় চার বয়সী শ্রাবন্তী আক্তার সোহাগী। মেয়েকে হারিয়ে তার দিনমজুর বাবা-মা দিশেহারা হয়ে পড়েন।
অপহৃত শিশুর বাবা-মা এখনো প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন, সাংবাদিকদের দেখলেই তারা হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন। এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় সোহাগীর মায়ের,এময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,’মামা আমার মাইয়াডা নাই হইছে পাঁচ বছর হয়ে গেলো কেউ কোন খোঁজ দিতে পারলেন না। আমরা গরীব বলে আমগোরে কেউ গুরুত্ব দেয়না,বড় লোক অইলে ঠিকই মাইয়াডা আমগো ফেরত পাইতাম।
জানা যায়, তাদের অনুসন্ধানে মেয়ের অপহরণকারী হিসেবে চিহ্নিত হয় পাশের ভাড়াটিয়া দম্পতি। এব্যাপারে শিশুটির বাবা আজিজুল হক বাদী হয়ে ওই দম্পতি লাল চাঁন ও জোছনা বেগমকে আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং ১৫। তাং ০৮/১০/১৪ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩ এর ৭/৩০। কয়েক দফায় মামলাটি নরসিংদী মডেল থানা হতে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হয়ে মাধবদী থানায় হস্তান্তরিত হয়। এরই মধ্যে বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের কারণে মামলাটির কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নাই।
তবে ২০১৪ সালে এ খবরটি দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হলে মাঠে নামে পুলিশ। প্রায় ৩ মাস পর নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সহযোগীতায় সিএমপি পুলিশ অপহরণকারীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিসহ চট্টগ্রাম থেকে ১ ব্যক্তিকে আটক করলেও হদিস বের করতে পারেনি শিশুটির। এর ১ সপ্তাহ পর জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় আটককৃত ব্যক্তি।
এ বিষয়ে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ও মিডিয়া সমন্বয়ক রুপণ কুমার সরকার পিপিএম জানান,এ মামলাটি দুই বছর আগে ডিবিতে ছিলো। তারপর পিবিআইতে চলে যায়। শিশু সোহাগী অপহরণের মামলাটির তৎপরাতা চলছে।