নিখোঁজের ছয়মাস পর নরসিংদী সদর উপজেলা মাধবদীতে কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন মানবসেবা সংগঠনের সহযোগিতায় পরিবার খুঁজে পেলেন কুমিল্লার বুড়িচং থানার আবুল হাশেমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৪৫)। বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মাধবদী থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান ও থানা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ওই নারীর স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে সংগঠনের কর্মকর্তারা তাকে হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, গত শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের মৈষাদি গ্রামে রাস্তার পাশ থেকে শীতে কাতর অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দেন স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় মানবসেবা সংগঠনের সাহিত্য সম্পাদক আল-আমিন। মহিলাটি কথা বলতে পারছিলেন না, তাছাড়া তার চুলে দীর্ঘদিনের ময়লার জট ও মূত্রমাখা শরীর থেকে উৎকট গন্ধ বের হওয়ায় কেউ তার কাছে যাচ্ছিল না।
এ অবস্থায় আল-আমিন তার স্ত্রীর সহযোগিতায় মহিলাকে বাড়ি নিয়ে নিজ হাতে চুল কেটে গোসল করিয়ে বাড়িতে আশ্রয় দেন। খবর পেয়ে মানবসেবা সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ইমন, মাধবদী থানা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহিন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাংকেতিক খবর উপস্থাপক আরিফুল ইসলাম ও মাধবদী থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে মহিলাটির খোঁজ খবর নেন।
মহিলাকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিলে তিনি কিছুটা সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরে যাওয়ার আকুতি জানান। এ ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হলে জমিলা বেগমের স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা ওই গ্রামে আল-আমিন এর বাড়িতে ছুটে আসেন।
জমিলা বেগমের স্বামী আবুল হাসেম জানান, গত ছয় মাস আগে জমিলা বেগম স্ট্রোক করায় সে কিছুটা মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গত ১৩ জুন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে ১৯ জুন বুড়িচং থানায় জিডি করা হয়। এরপর দীর্ঘদিনেও তাকে না পেয়ে তাদের একমাত্র প্রবাসী ছেলেসহ তাদের গোটা পরিবার হতাশ হয়ে পড়ে। অবশেষে দীর্ঘ ছয়মাস পর গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তারা এখানে ছুটে আসেন। তিনি এই সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার ভুয়সী প্রশংসা করেন।
মাধবদী থানা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহিন জানান, একতা মানবসেবা সংগঠনের কর্মীদের কাছে খবর পেয়ে তিনিও তাদের সঙ্গে জামিলা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এতে ওই জামিলা বেগম কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাধবদী থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। এরপর থেকে জামিলা বেগম স্বজনদের খোঁজে সবাই তৎপর হয়ে উঠেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে চারদিন পর কুমিল্লা এলাকায় স্বজনদের খোঁজ মিলে।