বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এর মধ্যে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
চুক্তির মধ্যে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে তা হলো- কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন প্রকার নীতি প্রণয়ন, মানসম্মত কার্যপদ্ধতি প্রণয়ন, যুগোপযোগী গাইডলাইন নির্মাণ, কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২১-২০২৬ প্রণয়ন, বিভিন্ন প্রকার রেফারেন্স ল্যাব স্থাপন, বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ ইত্যাদি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চাষযোগ্য জমির পরিমাণ মাথাপিছু অন্য অনেক দেশের চেয়ে কম এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব পৃথিবীর সর্বোচ্চ। এ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। খাদ্যে ভেজাল বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ ব্যক্ত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নেতৃত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা অর্জন করার জন্য জনবলের দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান, ট্রেনিং এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নাই।
স্বাধীন বাংলাদেশের শুরু থেকেই বন্ধুরাষ্ট্র জাপান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করলেও নিরাপদ খাদ্যের জন্য এ প্রকল্পটি প্রথম উদ্যোগ। এজন্য তিনি জাপানের জনগণ এবং সরকারকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, সাম্প্রতিক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি দেখার মতো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এই প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জাপান সরকারের জাইকা বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি জানান।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে হোটেল ও রেস্তোরাঁ মনিটরিং সংক্রান্ত ‘নজর অ্যাপ’ এর উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ সময় তিনি ‘নজর অ্যাপে’র মাধ্যমে রাজধানীর নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁর দুটি আউটলেট ও ফার্স রেস্তোরাঁর মনিটরিং কার্যক্রম দেখেন। পর্যায়ক্রমে ঢাকাসহ সারাদেশের হোটেল-রেস্তোরাঁ ‘নজর অ্যাপে’র আওতায় আনা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম, জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি এর অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আকতার। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার এবং জাইকার পক্ষে জাইকার প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওা রেকর্ড অফ ডিসকাশনে স্বাক্ষর করেন।