দুই ভাইস চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় নরসিংদীর বেলাব উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সমসের জামান(রিটন)কে স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে । রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রাণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সামসুল হক স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা হয়। একই সাথে উপজেলার প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. মরিনুজ্জামান ভূইয়া জাহাঙ্গীরকে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা জন্য পরিষদের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
এর আগে ওই উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানদের সম্মানী ভাতা, ভ্রমণ ভাতা ও আপ্যায়ন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সমসের জামান রিটনকে কেন অপসারণ করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরে গত ১৮ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা শাখা-২ এর উপসচিব মোহাম্মদ সামছুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে এর ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। গত ৫ মার্চ ২০২০ইং নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে আইনগত সুরাহা চেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের পেডে লিখিত আবেদন করেছিলেন ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয়।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বেলাব উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান ভূঞা জাহাঙ্গীর ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখে সোনালী ব্যাংক বেলাব শাখা থেকে নিজেদের সম্মানী ভাতা উত্তোলন করেন। গত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের মাসিক ভাতা ২৭ হাজার, ভ্রমণ ভাতা আট হাজার, আপ্যায়ন ভাতা পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের চার হাজার ৪২১ টাকা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের চার হাজার ৩৬৬ টাকার চেক যথারীতি অফিস সহকারী তৌফিক আফ্রাদের নিকট চাইলে তিনি জানায় উপজেলা চেয়ারম্যান পুরো চেক বই তাঁর কাছ থেকে নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছেন। পরবর্তীতে ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ৪ ডিসেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি দ্রুত সুরাহা করতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। কিন্তু দুই মাস অতিবাহিত হলে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দুই ভাইস চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অনুলিপি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে গত ৩ ডিসেম্বর নরসিংদী সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম সচিব) খান মো. নূরুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত শেষে নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আত্মসাতের কারণে উপজেলা পরিষদ আইনে অপসারণ, অনাস্থা ও পদ শূন্যতা বিধিমালা ২০১৬ মোতাবেক স্বীয় পদ থেকে কেন অপসারণ করা হবে না সে মর্মে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।