নরসিংদীর রায়পুরাতে “ মানবতার ফেরিওয়ালা” নামে একটি মানবিক সংগঠনের উদয় হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের ২৭ জন সমাজসেবীকে নিয়ে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর তাদের যাত্রা শুরু হয়।
সংগঠনটিকে এগিয়ে নিতে মালোশিয়া প্রবাসী সাঈদ সুজনকে সভাপতি ও আবু সালেহ রাতুলকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলে তারা। যার প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দুস্ত ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাঈদ সুজনের কাছে সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করােনাকালীন মানুষের
দুঃখ-দুর্দশা দেখে অসহায় মানুষের জন্য কিছু করবো বলে মনস্থির করি। পরে ছাত্র ও কর্মজীবি কিছু তরুণদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলােচনা করি। যদিও প্রথম অবস্থায় মানুষের উৎসাহ বা সাড়া তেমন পায়নি। কিন্তু তারপরও আমরা থেমে থাকিনি। আমারা নিজেদের উদ্যোগ ৭০ হাজার টাকার একটা ফান্ড ব্যবস্থা করি। পরে সে টাকায় আমরা করোনা কালীন সময়ে অসহায়, দুস্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উপহার দিয়েছি। আমাদেরকে দেখে সমাজের আরো বিত্তবানরা নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষদের সহযোগিতা করে গেছে। আমি ধন্যবাদ জানাই “মানবতার ফেরিওয়ালা” সংগঠনের সকল সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের। তাদের এ ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ ও সহযোগিতায় আজ আমাদের সংগঠন এতো দূর। আমি মনে করি ভবিষ্যতেও এ সংগঠনের সকল সদস্যবৃন্দ একসাথে মিলে মিশে যে কোন অসহায়, দুস্ত মানুষের সেবার কাজ চালিয়ে যাবে।
তারই ধারাবাহিকতায় আসছে পবিত্র রমজানে গরিব,অসহায়দের ইফতার বিতরণ ও নতুন জামা, কাপড় দেয়ার ইচ্ছা পােষণ করছি।
এছাড়া গরীব মানুষদের রিকশা, গৃহকর্মীদের সেলাই মেশিন সহ যেকোনাে কর্ম ব্যবস্থার মাধ্যমে
সাবলম্বি করে তােলাই আমাদের সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য।
আশা করছি এ ভালো কাজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সহযোগীতা পাবো।সেক্ষেত্রে সরকারি সহযােগীতা পেলে আমরা দরিদ্র অসহায়দের আরাে বেশি সাহায্য সহযােগীতা করতে পারবাে। এছাড়া পবিত্র রমজানে আমাদের এ উদ্যোগ সফল করতে রায়পুরাবাসী সহ অন্যান্য বিত্তবানদের এগিয়ে আশার জন্য অনুরোধ রইলো।
অপর দিকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাতুল চৌধুরীর বলেন, “মানবতার ফেরিওয়ালা” একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আমরা মূলত বিভিন্ন অসহায় ও দারিদ্র মানুষকে নিয়ে কাজ করে থাকি। উদাহরণ স্বরূপ: ইতিমধ্যেই এই শীতে আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বেশি শীতবস্ত্র বিতরণের কাজে ব্যায় করেছি, এছাড়া ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিশুকে ২০ হাজার টাকা, গরিব একজন রিকশাচালককে তার চিকিৎসা বাবদ ৫ হাজার টাকা এবং একটি এতিমখানায় ৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছি।
শুধু এতেই আমারা থেমে থাকিনি, আমাদের সকল সদস্যদের ব্লাড গ্রুপ করা আছে যার মাধ্যমে আমারা ব্লাড ব্যাংক হিসেবে ও কাজ করছি এবং বিভিন্ন জরুরি প্রয়ােজনে রক্ত সরবরাহ করে থাকি। ইতিমধ্যে সকল সদস্যকে নিয়ে আমাদের মানবতার ফেরিওয়ালা সংগঠনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আমরা আশা করছি, রায়পুরার বিভিন্ন প্রান্তে অসহায়দের নিয়ে কাজ করতে করতে একটা সময় এ সংগঠন বিশাল আকার ধারন করে মানুষদের সেবা দিয়ে যাবে। এছাড়া আর্থিক সাহায্য সহযােগীতার বিষয়টি সরকারি ভাবে রেজিস্ট্রিকৃত হলে গরীব, দুস্তদের সহযােগীতার আরাে প্রসার ও বেগবান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক ব্যক্তিরা।