মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে আবারও গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। আর এতে করে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
টানা বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বুধবার (০৩ মার্চ) বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ২ জন, ইয়াঙ্গুনে ১ জন, মিংগিয়ান শহরে ১ জন, মধ্যাঞ্চলীয় শহর মোনিয়াতে ৫ জন রয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
মোনিওযা গ্যাজেট নামে স্থানীয় অপর একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর মোনিয়াতে পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত হয়েছে। মধ্যাঞ্চলের আরেক শহর মায়েনগিয়ানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ছাত্রনেতা মোয়ে মিন্ট হেইন জানিয়েছেন।
তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী আমাদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়েছে। এক ডজন নিহত হয়েছে। আমি নিজেও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছি।’
তবে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের বিষয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। আটক করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি’সহ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও শাসক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে। দেশটিতে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও নিন্দার ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডার মতো দেশগুলো মিয়ানমারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
গেল নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। সুষ্ঠু ভোটের মধ্য দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা যথারীতি হস্তান্তর করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং।