ট্রাইব্যুনাল আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীকে শোকজ করেছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল আদালত। বুধবার (৩ মার্চ) অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. সাইফুল আলম এ কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সরকার পক্ষের জিপি মীর রফিকুল ইসলাম আজম ও অপর পক্ষের আইনজীবী মুহা. মাহবুব আলম কবির এ নির্দেশ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অর্পিত সম্পত্তির তালিকা হতে অবমুক্তকরণের মামলা ও রায়ের ডিক্রি অনুযায়ী আদেশ কার্যকর করাসহ সম্পত্তির করে রেকর্ড না দেয়ায় সংক্ষুব্ধ জনৈক আবদুর রাজ্জাকের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে অদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। শোকজ নোটিশে কেন জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবেনা তৎমর্মে ভিপি কৌশলীর মাধ্যমে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে লিখিত ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে বলে আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে।
ঝালকাঠি অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল আদালতের আইনজীবী মুহা. মাহবুব আলম কবির জানান, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনাল গত ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রয়ারি বাদী পক্ষ আবদুর রাজ্জাক গং কে ৫ একর ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি অবমুক্ত করে দেয়ার রায় প্রদান করেন। রায়ের ডিক্রি অনুযায়ী বাদী পক্ষ ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর ও ২ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বরাবর ট্রাব্যুনালের রায় বাস্তবায়নের জন্য দুই দফা আবেদন করেন।
তবে রহস্যজনক কারণে প্রতিপক্ষ ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক আদালতের রায় যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে সংক্ষুদ্ধ হয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মুহা. মাহবুব আলম কবির এর মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল বরাবর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ২০০১ এর ৩২ (গ) ধারা মোতাবেক প্রতিপক্ষ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৃথক এক আবেদন করেন।
অ্যাড মুহা.মাহবুব আলম কবির আরো জানান, এ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যদি আপীল ট্রাইব্যুনালের কোন নির্দেশ বা ডিক্রি বাস্তবায়নে প্রদত্ত নির্দেশ জেলা প্রশাসক লংঘন করে, তবে তিনি অনধিক সাত বছর কারাদণ্ড বা অনাধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই মামলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক আদালতের রায়ের কপি অফিসিয়ালিভাবে দুইবার গ্রহণ করলেও অজ্ঞাত কারণে গত দেড় বছরেও তা বাস্তবায়ন করেনি।
জেলা প্রশাসক আদালতের আদেশ অমান্য করায় আমরা আদালতে তার বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার চেয়েছি। মামলায় আদালতে বাদী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মুহা. মাহবুব আলম কবীর ও সরকার পক্ষে ভিপি কৌশলী ছিলেন, মীর রফিকুল ইসলাম আজম।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী কোন বক্তব্য না দিলেও সরকারের পক্ষে নিয়োজিত ভিপি কৌশলী জিপি অ্যাড. মীর রফিকুল ইসলাম আজম বলেন, জেলা প্রশাসক আদালতের রায় বাস্তবায়নে একান্ত অনুগত। তবে জেলা প্রশাসক গত দেড় বছরেও আদালতের আদেশ কেনো বাস্তবায়ন করেনি সে বিষয় কোন মন্তাব্য করেননি।