হেফাজত ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা কম। এছাড়াও ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে বলে চোখে পরেছে।
এদিকে সকাল থেকেই রাজধানী বেশির ভাগ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন চলছে স্বাভাবিকভাবেই। তবে যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। শনির আখড়া থেকে গুলিস্তানগামী গাড়ির চাপ অন্যান্য দিন অনেক বেশি থাকলেও আজ সেই সংখ্যা কম।
সকাল ৬টা থেকে যান চলাচল কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে যান চলাচল বাড়তে থাকে। তবে, অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কম দেখা গেছে।
এদিকে গণপরিবহন কিছুটা কম থাকায় চাহিদা বেড়েছে রিকশা-সিএনজির। সব জায়গায়ই এসব পরিবহনের চলাচল বেশি দেখা গেছে।
গুলিস্তানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ মইনুল বলেন, হরতালের জন্য গাড়ি চলাচল কিছুটা কম। তবে গাড়ি চলছে। অন্যান্য কর্মদিবসে গাড়ির চাপ যেমন থাকে, আজ তার থেকে কিছুটা কম।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সামসুল আলম বলেন, যানবাহন অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। সাইনবোর্ড থেকে গুলিস্তান এসেছি। তবে এখন গুলিস্তান থেকে মালিবাগে দিকে যাওয়ার গাড়ি পাচ্ছি না। অন্যান্য দিন একের পর এক গাড়ি আসলেও আজ গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই কম।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা এবং সংঘর্ষে কয়েকজন নেতাকর্মী নিহতের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। এই হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত সদস্যদের কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। হরতালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি মাঠে থাকবেন বিজিবি সদস্যরা।
সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পুলিশ ও র্যাব সদর দফতরে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের জানমাল, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এই হরতালের নামে বিক্ষোভ, মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতার চেষ্টা করবে, জ্বালাও-পোড়াও করবে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। কেউ যদি যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করে, থানায় হামলা বা আগুন দেয়ার চেষ্টা করে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনে রাখতে হবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে র্যাব সদর দফতর সব ব্যাটালিয়নকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি র্যাব সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। কেউ হরতালের নামে সহিংসতা করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক সারাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় সংগঠনটি। তাদের ডাকা হরতালে সমর্থন দিয়েছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনসহ বেশ কিছু ইসলামী দল।