স্বামীকে হত্যার উদ্যেশ্যে মারধরের অভিযোগে স্ত্রী রাজিয়া বেগমের আদালতে মামলা দায়ের। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার মতলব উত্তর উপজেলার লবাইরকান্দি গ্রামে। মামলা সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার লবাইরকান্দি গ্রামের মৃত মরহুম আলী প্রধানের ছেলে তাজুল ইসলামের বসতঘরে বারংবার বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির বিষয় নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। মামলার আসামী কালাই দেওয়ান, আলী হোসেন দেওয়ন, অলিউল্লাহ দেওয়ান, বজলু দেওয়ান সর্ব পিতামৃত আরব আলী দেওয়ান সাং একই উপজেলার লবাইরকান্দি। বাদিনীর স্বামী মামলার ১নং সাক্ষী তাজুল ইসলাম আসামীদের চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন।
দির্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সময়ে চুরিকৃত জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার কথা বলে আমাসীদ্বয় অঙ্গিকার করে আসলেও তাজুল ইসলামকে তা ফিরিয়ে না দিয়ে উল্টো বিভিন্নভাবে তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছিল। তাজুল ইসলামের মায়ের দু দুবার দুভরি ওজনের গলার সোনার চেইন চুরি, মোবাইল চুরি, সর্বশেষ বাড়ির মটর চুরি হয়।
ঘটনার দিন ২ ফেব্রুয়ারী রোজ রবিবার সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে বাদিনীর স্বামী তাজুল ইসলাম বাজার থেকে সাংসারিক সদাই ক্রয় করে বাড়ীর উদ্যেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে আসামীদের বাড়ীর পশ্চিম পাশে ব্রীজের উপর তাজুল ইসলামকে একা পেয়ে আসামীদ্বয় তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আগে থেকে ওঁতপেতে থাকা আসামীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাজুল ইসলামের উপর জাপিয়ে পড়ে। আসামীদের হাত থাকা লোহার রড দিয়া বাদিনীর স্বামীকে বেধরক মারধর করে তার হাতের হাড় ভেঙ্গে দেয়, এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ মারাত্মক জখম হয়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ বাদিনী নিজে ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে।
আশপাশের লোকজনসহ বাদিনী আসামীদের থামাতে চাইলে বিপরিতে আসামীদ্বয় তাদের হুমকী প্রদান করে বলেন, এই ঘটনায় থানা পুলিশ অথবা মামলা করলে তোদের পরিবার পরিজনদের খুন করে ফেলবো। এবং তোর মেয়েদের অপহরন করে নিয়ে গুম করে ফেলবো। মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিব।
পরবর্তীতে বাদিনী তার স্বামীকে মারাত্মক আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে বাদিনীর স্বামী তাজুল ইসলাম ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজও তার শরীরের অপারেশনের স্হানে ড্রেসিং করা হয়। দেরীতে হলেও আসামীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থার জন্য আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন রাজিয়া বেগম। স্বামীর চিকিৎসার কারনে মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়েছে বলে বাদিনী জানিয়েছেন।
এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, প্রধান আসামী মাদকাসক্ত। মাদকের অর্থ জোগানের জন্য মাদকসেবিরা চুরি ডাকাতি সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত। এলাকাবাসী জানান, ওয়ালি উল্লা দেওয়ানের খামার বাড়িতে বসে পরিকল্পনা হয় এইসকল অপকর্মের। তাজুল ইসলাম এসব কুকর্মের প্রতিবাদ করায় তার উপর হামলা করে আসামীরা।