আরও প্রবল হয়ে আসা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে ‘মানুষের জীবনকেই’ সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষের জীবনটা আগে। কারণ জীবন যদি না বাঁচে তাহলে আমাদের অর্থনীতিই বা কী রাজনীতিই বা কী। কাজেই মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে।’
রবিবার (৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) প্রধান কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার ঘোষণা থাকলেও মানুষের জীবন বাঁচানোর চেয়ে বড় কিছু নেই বলেও জানান সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনীতির মন্দাভাব দেখা দিলেও বাংলাদেশে আমরা কিন্তু গতিটা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। প্রবৃদ্ধি অর্জনেও অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে… দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। আমাদের সেটা ধরে রাখতে হবে।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিন্তু সাথে সাথে আমাদের দেশের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন সচল থাকে সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। তবে মানুষের জীবন আগে। কারণ জীবন যদি না বাঁচে তাহলে আমাদের অর্থনীতিই বা কী রাজনীতিই বা কী। কাজেই মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে।’
করোনা মহামারির এই কঠিন সময়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিয়ম-নীতিগুলো মেনে চলা এবং সেভাবে নিজেকে সুরক্ষিত করা এবং অন্যকেও সুরক্ষিত রাখতে হবে। এটা অবশ্যই সবাইকে করতে হবে।’
করোনা মোকাবিলায় সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা ও সবশেষ লকডাউন ঘোষণার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। এসব নির্দেশনা যাতে যথাযথভাবে মানুষ পালন করে সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।’
এসময় করোনা নিয়ন্ত্রণে এনএসআই সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনেরও নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারি আজকে বিশ্বব্যাপী একটা বিরাট সমস্যা। অর্থনীতি প্রায় স্থবির, মানুষের জীবনযাত্রাও স্থবির। হয়তো আমরা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রেখে যখন একটু মানুষের জীবন সচল করলাম, তখন আবারও নতুন করে দ্বিতীয় দফায় এই করোনা দেখা দিয়েছে।’
সরকারের সংশ্লিষ্টসহ করোনাযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ব্যবস্থাপনায়ও আপনারা অতীতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। বর্তমানে যে অবস্থাটা চলছে সেখানেও আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। গোটা বিশ্বেই একই অবস্থা। আপনাদের আরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যদিও করোনা মহামারি হয়তো কিছু বাধা সৃষ্টি করবে। কিন্তু এখান থেকেও আমরা উত্তরণ ঘটাতে পারবো। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন আমরা দেয়া শুরু করেছি। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’
এসময় সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এনএসআইয়ের নবনির্মিত ভবনকে ‘মুজিববর্ষের উপহার’ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।