করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাবেক সংসদ সদস্য, চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা সারাহ বেগম কবরী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। কবরীর ছেলে শাকের চিশতী খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন এই গুণী অভিনেত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিলো বলে জানিয়েছিলো চিকিৎসকরা। করোনার রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসার পরেই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কবরীকে।
সেখান থেকে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এরপর শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। তবে শেষ রক্ষাটা হলো না। চলে গেলেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্ম নেন তিনি। কবরীর পূর্ব নাম ছিলো মিনা পাল। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মিনা পাল থেকে কবরী হয়ে উঠেন তিনি।
‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেকের পরের বছর অভিনয় করেন ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’য়, ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ ছবিগুলো। দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘সুজন সখী’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘সারেং বউ’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’সহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
চিত্রনায়িকা কবরী অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবে নির্মাণ করেছেন সিনেমা। করেছেন প্রযোজনাও। ২০১৭ সালে এসে তিনি ‘স্মৃতিটুকু থাক’ শিরোনামে একটি আত্মজীবনী মূলক বই লিখেন।