ডা:নুরুল্লাহ আল মাসুদ ২০১০ সালে নরসিংদী ডায়বেটিকস এন্ড জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যুক্ত হন। এক বছরেরই তিনি সহকর্মী ডাক্তারদের প্রিয় হয়ে উঠেন। হাসপাতালের ডাক্তাদের বিভিন্ন সমস্যায় তিনি নিবেদিত প্রাণ। যে কারও সমস্যায় ভরসার জায়গা ডাক্তার মাসুদ। ৬ বছরের মধ্যে হাসপাতালে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে পদোন্নতি হয় তার। করোনা কালীন সময়ে মানবতার এক অন্যান্য দৃষ্টি স্থাপন করেছেন তিনি। রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় সেবা দিয়েছেন তিনি। হতদরিদ্র রোগীদের বিনামূলে চিকিসাৎ সেবার পাশাপাশি নিজ পকেটের টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় ঔষধ দিয়েছেন এ মানব প্রেমিক। তাই তো নিম্ন আয়ের রোগীয় কাছে তিনি মানবতার প্রতীক।
হাসপাতালে ডাক্তার নুরুল্লাহ আল মাসুদের সহকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাম গঞ্জে থেকে আসা হতদরিদ্র অনেক রোগীদের তিনি নিজ পকেটের টাকা দিয়ে চিকিসাৎ করান এবং মাঝে মাঝে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিশেষ ছাড়ের ব্যাবস্থা করে থাকেন। গভীর রাতেও তিনি রোগীদের ফোন ধরেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিসাৎ প্রদান করেন। শুধু তাই নয় করোনায় খেটে খাওয়া প্রায় শতাধিক পরিবারের পাশে খাদ্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়ে হাজির হন ডাক্তার নুরুল্লাহ আল মাসুদ।
সহকর্মীরা আরোও জানায়, নুরুল্লাহ আল মাসুদ নরসিংদী ডায়বেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার। তার বাবা মোঃনিজাম উদ্দিন ছিলেন সাটির পাড়া কে.কে.ইনস্টিটিউটের সহকারি শিক্ষক। দুই ভাই বোনের মাঝে মাসুদ বড়। ছোট বেলা থেকে শিক্ষক বাবা ও মায়ের তীব্র ইচ্ছে ছিল,ছেলে কে ডাক্তার বানাবে। বাবা মার ইচ্ছে অনুযায়ী তার ডাক্তারি পেশায় আসা। শিক্ষক বাবার একটাই ইচ্ছে ছেলে ডায়াবেটুলজিস্ট হিসেবে কাজ করবে। অন্য কোন ডিপার্টমেন্টে নয়।
তারা আরোও জানায়, নরসিংদী বেলাব উপজেলার সাল্লাহ গ্রামের এক কিশোর দীর্ঘদিন যাবত ডায়বেটিকে সমস্যায় ভুগছেন, তার বাবা একজন কৃষক। কৃষক বাবার পক্ষে নরসিংদীতে এসে ছেলে কে চিকিসাৎ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি মাসুদের কাছে আসলে তিনি গরীব কৃষকের ছেলের চিকিসাৎর দায়িত্ব নিজ কাধে তুলে নেন। নিজ পকেটের টাকা দিয়ে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চিকিসৎা করাচ্ছেন ছেলেটি কে। মাঝে মাঝে নিজ ব্যবহত গাড়ি এ্যামুলেন্স হিসেবে গরীব রোগীদেন সেবায় বিলিয়ে দেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে মানুষ ডাক্তারদের নিয়ে বাজে কথা বলেন সেখানে ডাক্তার নুরল্লাহ আল মাসুদ সত্যই মানবতার দৃষ্টান্ত।
সাহেপ্রতাব মহল্লার আমেনা বেগম বলেন, আমি নরসিংদী ডায়বেটিক হাসপাতালে যায় চার পাঁচ বছর ধরে। তখন থেকে আমার স্যারের সাথে পরিচয়। স্যার সব সময় আমাকে একটু্ বেশি সময় করে দেখতেন ও প্রয়োজনীয় সেবা দিতেন। হঠাৎ করোনায় লকডাইনে আমি অনেকটা চিন্তিত হয়ে পরি। কিভাবে হাসপাতালে যাবো। স্যারের সাথে ফোনে কথা বলি। পরদিন সকালে স্যার প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়ে বাসায় হাজির। স্যারের মত মানুষ হয় না। আল্লাহ স্যার কে নেক হায়াত দান করুন।
ডা:নুরুল্লাহ আল মাসুদ বলেন জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত নিজেকে মানব সেবায় বিলিয়ে দিতে চায়।
– লক্ষণ বর্মন | নরসিংদী প্রতিদিন-