গত ৬ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলের দিকে কিছুটা সরে এসেছে। উপকূলের আরও কাছাকাছি আসায় এর প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও খালগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বুধবার দুপুরের দিকে ঝড়টি উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশে এর প্রভাব তীব্রভাবেই পড়বে। সে সময় দেশের ১৪টি উপকূলীয় জেলা এবং চর ও দ্বীপে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১২ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১২ অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ ও কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পূর্বের নির্দেশিত যাত্রাপথ থেকে কিছুটা উত্তর-পূর্বদিকে সেরে এসেছে। ফলে পূর্বে ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের কোনো অংশ বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত না হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সর্বশেষ পথ অনুসারে ঘূর্ণিঝড় বিত্তের কিছু অংশ সরাসরি সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, নৌ-যান চলাচল সীমিত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা-চাঁদপুর, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-ভোলা ও ঢাকা-ভোলারহাট ছাড়া অন্য সব রুটে নৌ-যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।