নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুত্রকে হত্যায় সন্দিগ্ধ সেই নারীর ঝুলন্ত লাশ মিলেছে নরসিংদীর একটি আবাসিক হোটেলে। নরসিংদী শহরের বাজিরমোড়ে নিরালা নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে সোমবার (৩১ মে) বিকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, হোটেল রেজিস্টারে নাম লেখা রয়েছে রেহানা আক্তার (৩০), পিতা আবু তাহের, মাতা ফাতেমা জোহরা, গ্রাম ডৌকাদি, নরসিংদী।
সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকায় পুত্র নাজমুল সাকিব নাবিলকে (২০) রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করার পর থেকে তার মা’ নাসরিন বেগম (৪০) নিখোঁজ ছিলেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করেছিল, ছেলেকে হত্যার পরে সে পালিয়ে গেছে। ঘটনার একদিন পরেই নরসিংদীতে মিলল তারও লাশ।
তবে নরসিংদী পুলিশ জানিয়েছে, আবাসিক হোটেলের ওই কক্ষে লাশ উদ্ধারের সময় ওই নারীর পা ফ্লোরে লাগানো অবস্থায় ছিলো। নাক দিয়েও রক্ত বের হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পরে বলা যাবে-এটা হত্যা আত্মহত্যা।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের ম্যানেজার নাদিমকে আটক করা হয়েছে। গত ৩০ মে সিদ্ধিরগঞ্জে পাইনাদী এলাকায় নিজ কক্ষ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় নাজমুল সাকিব নাবিলকে (২০) উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে নাবিলের মা নাছরিন বেগম পলাতক ছিলেন।
রোববার রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় নাবিলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নাবিলের বাবা ও নাছরিনের স্বামী ছগির আহমেদ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় কর্মরত। তিনি জানান, অফিস শেষে বাসায় ফিরে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় নাবিল আর্তনাদ করছে। এসময় স্ত্রী নাছরিন বেগমকে (৪০) বাসায় পাননি। নাবিলের স্ত্রী-ও বাপের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাবিলকে উদ্ধার করে প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার বেগতিক দেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাত ২টার দিকে নাবিল মারা যায়।
তিনি আরও জানান, তার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে মাঝে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পায়।
ছগির আহমেদ এর গ্রামের সোনারগাঁয়ের পৈতারগাঁও এলাকায়। সিদ্ধিরগঞ্জে পাইনাদী নতুন মহল্লায় বাড়ি কিনে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, লাশটি নাছরিন বেগমের এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তিনি ওখানে গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।