করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিস্তারে দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ন্ত্রণে দেশে চলমান লকডাউনের পরিবর্তে কারফিউ বা ১৪৪ ধারার মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল এনসিডিসি পরিচালক ও অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশে কঠোর লকডাউন চলছে কিন্তু মানুষের চলাফেরা বা জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে দেশের মানুষ কারফিউ বা ১৪৪ ধারার মতো কর্মসূচিগুলো ভয় পায় এবং প্রতিপালনের চেষ্টা করে। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের কর্মসূচি দিলে করোনা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সহায়ক হবে।
এর আগে ডেল্টা ধরনের বিস্তারে দেশে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি দুই সপ্তাহের শাটডাউনের (সব বন্ধ) সুপারিশ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য সরকার সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেওয়া হয় ২১টি নির্দেশনা।
এ সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া অন্যসব অফিস-আদালত বন্ধ, যান্ত্রিক যানবাহনে যাত্রী বহনও নিষিদ্ধ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা আছে শিল্পকারখানা এবং সীমিত আকারে খোলা আছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠে আছে সশস্ত্রবাহিনী। জনসাধারণকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। রাস্তায় বেরিয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে করা হচ্ছে গ্রেফতার জরিমানা।
এ বিধিনিষেধ ৪ দিন গড়িয়ে গেলেও পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি, বরং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হয়েছে এর মধ্যে। এ পরিস্থিতিতে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পক্ষে রবিবার সুপারিশ করে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
সেই সুপারিশের আলোকে বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হলো। বিধিনিষেধের বর্ধিত সময়েও আগের জারি করা ২১ দফা নির্দেশনা বহাল রাখা হয়।
এদিকে করোনায় আবারও একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৬৫১ জন, যা মহামারিকালে একদিনে সর্বোচ্চ। এদিন মৃত্যু হয়েছে ১৯৯ জনের।আগেরদিন মৃত্যু হয়েছে সর্বোচ্চ ২০১ জনের।