নরসিংদীতে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে গ্রামে, শহরের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের হাতে বই পৌঁছে দেন ড. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের বাইরে অন্য বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে নিজের কেনা বিভিন্ন লেখকের বই বিতরণ করে থাকেন তিনি। বই পড়া আন্দোলনের অংশ হিসেবে বই পড়ার জন্য নানাভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই শিক্ষাবিদ। তিনি নরসিংদী প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা।
স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পাঠকেরা বলেন, নরসিংদী শহরে ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দেন মোয়াজ্জেম হোসেন। নিজের টাকায় বই কিনে এভাবে বিতরণ করে বই পড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। তিনি বই নিয়ে শহরের পথে পথে হাঁটেন। নরসিংদী শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি–পেশার মানুষের কাছে নিজে বই দিয়ে আসেন এবং এক সপ্তাহ পর আবার তা ফেরত নিয়ে অন্য বই দেন। এভাবে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত জ্ঞানের আলো বিতরণ করে চলেছেন। নরসিংদী শহরে পাঁচ-ছয়টি সেলুন লাইব্রেরিও গড়ে তোলেন তিনি।
ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, পাঠক বাড়ানো ও বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরতেই বই পড়া আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। নরসিংদী শহরের পশ্চিম ব্রাহ্মন্দীতে অল্পসংখ্যক বই দিয়ে নিজ উদ্যোগে ২০০০ সালে শুরু করেছিলেন নরসিংদী পাবলিক লাইব্রেরির। এখন সে লাইব্রেরিতে পাঁচ হাজারেরও বেশি বই রয়েছে।
ড. মোয়াজ্জেম আরও বলেন, তাঁর লাইব্রেরিতে বিভিন্ন দুর্লভ বই, প্রাচীন পুঁথি, প্রাচীন ইতিহাস, রাজনীতি, বিখ্যাত কবি–সাহিত্যিকদের রচনাবলি, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, আত্মজীবনী, স্মৃতিচারণ, সম্মাননা, স্মারকগ্রন্থ, ইংরেজি সাহিত্য, বাংলা সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, দুর্লভ ম্যাগাজিন, অনুবাদ, ধর্ম–সংক্রান্ত বইয়ে আলাদা শেলফ রয়েছে। নরসিংদীর প্রায় ২০০ লেখকের বই রয়েছে এ লাইব্রেরিতে।
অবসরপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শাহজাহান বলেন, নরসিংদীতে পাঠ্যর বাইরে অন্য বইয়ের পাঠকে জনপ্রিয় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নরসিংদী পাবলিক লাইব্রেরি। বইপ্রেমী ড. মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের অদম্য আগ্রহ ও উৎসাহে নরসিংদীতে বই পড়ার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রাহক ও লেখক হাবিবুল্লাহ পাঠান বলেন, ‘মোয়াজ্জেম হোসেন শহরের বুকে নরসিংদী পাবলিক লাইব্রেরি নামে একটি বিশাল গ্রন্থভান্ডার গড়ে তুলেছেন। লাইব্রেরিটি আমি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। এটি অত্যন্ত সুন্দর উদ্যোগ।
খবর: আজকের পত্রিকা,আসাদুজ্জামান রিপন, নরসিংদী।