নরসিংদীর রায়পুরায় গ্রামীণ সড়কে বছরজুড়ে জনদূর্ভোগ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবত জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতির মধ্যেদিয়ে দিন পার করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ডের পাহাড়কান্দি গ্রামের লোপার বাড়ির মোড় হতে পাহাড়কান্দি মধ্যপাড়া হয়ে আনারাবাদ মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১.৫০ কিলোমিটার চলাচলের অব্যবস্থা হয়ে পড়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই কর্দমাক্ত রাস্তাটিতে যানচলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ছোট বড় গর্তের ফলে বৃষ্টি ব্যতিতও চলাচলে অসুবিধে হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামটিতে ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩ টি মসজিদ রয়েছে। এ সড়কে ইউনিয়ন পরিষদ, মির্জাপুর, সাপমারা, নীলকুঠি, উপজেলা, পাহাড় কান্দিসহ আশ পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। প্রতিনিয়ত গ্রামের মানুষ সহ মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল, সবজিতে অটোরিকশা, ভেনগাড়ি, ভিবাটেকসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে আসছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দা বলেন, ‘একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলার পর ও সড়কটি পাকা হচ্ছে না। জনগনের কষ্ট না বুঝলে কি আর করার আছে? মরার আগে রাস্তাটা হবে কি না কে জানে? প্রধানমন্ত্রী দেশের সব রাস্তাঘাট উন্নয়ন করছে। কিন্তু এই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে পারি না। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার চাই।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দীর্ঘবছর ধরে এই সড়কের বেহাল দশা। যখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসে তখনি এ এলাকার মানুষের একটাই প্রাণের দাবি এ রাস্তাটা পাকা করার কিন্তু দুঃখের বিষয় নির্বাচন আসে, নির্বাচন চলে যায়। কিন্তু এ রাস্তার কোন পরিবর্তন হয় নাই। কবে পরিবর্তন আসবে তাও আমরা জানি না। আমি রাজনীতির সাথে জরিত আমরা জনগণের কাছে কয়ফিয়ত দিতে হয়। সড়কটির ব্যাপারে কটু কথা শুনতে শুনতে, এখন তাদেরকে বুঝানোর মতো আর ভাষা নেই। উপজেলা প্রকৌশলীর মিষ্টি কথা শুন আসছি, দীর্ঘদিন অফিসে ঘুরতে ঘুরতে আজ আমরা ক্লান্ত।
নিয়মিত চলাচল কারি বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে যানবাহন দূরের কথা পা’হাটার অনুপযোগী হয়ে ওঠেছে।
রমিজ উদ্দিন জানান, জরুরি চিকিৎসাসহ নানাবিধ দূর্ভোগ পোহাচ্ছে হচ্ছে। অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়। জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনের সময় রাস্তাটি পাকা করনে আশ্বাস দিয়েই শেষ। এতদিন পার হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
ফজলু মিয়া বলেন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে বড় কষ্টকর সামান্য বৃষ্টি হলেই কর্দমাক্ত রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী।
ইউপি (২নং ওয়ার্ডের) সদস্য আসাদ মেম্বার বলেন, মেঠোপথটি দীর্ঘদিন যাবত অযত্নে অবহেলায় পরে থাকায় এ এলাকার বাসিন্দা দূর্বিষহ চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে আরও কষ্ট বেড়ে যাবে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন ভূইয়া বলেন, রাস্তাটি পাকা করনে আমার চেষ্টার কোনো কমতি নেই। প্রকৌশলী বললো দেরবছর পূর্বে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে বললো। বার বার উপজেলা অফিসে কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নিচ্ছি। জানতে পেরেছি করোনার কারনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিয়ত এ ব্যপারে ব্যপক কথা শুনতে হচ্ছে। দ্রত রাস্তাটি না হলে জনগনের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে।
উপজেলা প্রধান প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্না মুঠোফোনে এ ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান,’ মুছাপুরেরপ্রায় দের কিলোমিটার রাস্তাটি সংশোধিত (ডিপি)তে অন্তর্ভুক্ত করা আছে। কাজটি করার জন্য প্রক্রীয়াধিন রয়েছে।’ এ অবস্থায় দ্রুত সড়কটি পাকা করনে কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন দূর্ভোগে পরা স্থানীয় এলাকাবাসী।