যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এর মাধ্যমে এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
বিচার শুরু হওয়া অপর দুই আসামি হলেন- সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়িবা নূর। একই সঙ্গে আদালত আগামী ১৩ অক্টোবর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত। পাপিয়া দম্পতির আইনজীবী শাখাওয়াত উল্যাহ ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।
এদিন, অভিযোগ গঠন শুনানির আগে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি (ডিসচার্জ) চেয়ে শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ। আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
গত বছর ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নজমুল হক চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ জাল টাকা বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে বহন ও বিপুল পরিমাণ অপরাধলব্ধ অর্থ দেশের বাইরে পাচারের উদ্যোগ নেন।
গত বছর ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হয়। গত বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাটি দায়ের করেন র্যাব-১ এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সফিকুল ইসলাম। এর আগে গত বছরের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।