রুক্ষ হলেও তো দেশের মাটি! আজ তার উপরে যেন শুধুই রক্তের দাগ, মানুষের হাহাকার আর তালিবানি তাণ্ডব। বাধ্য হয়েই দেশ ছাড়তে হচ্ছে আফগান পরিচালক রোয়া হায়দরিকে। চোখের জলে দেশকে বিদায় জানালেন রোয়া। দিলেন আবার ফিরে আসার আশ্বাস।
রাতারাতি আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। ফিরেছে দু’দশক আগের অন্ধকারময় স্মৃতি। আর তাই মান-প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে চাইছেন আফগানরা। প্রাণ বাঁচানোর আকুতি নিয়ে প্রতিদিন কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো হন হাজার-হাজার আফগান নাগরিক। বেশিরভাগেরই পেটে খাবারের দানা পর্যন্ত নেই। নেই তেষ্টা মেটানোর জল। শুধু বিমানবন্দর নয়, খিদের জ্বালায় জ্বলছে গোটা আফগানভূম। এই পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে হয়েছে আফগান পরিচালক রোয়া হায়দরিকে।
ছবি পরিচালনার পাশাপাশি ভালো ফটোগ্রাফার রোয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি তিনি শেয়ার করেছেন, তাতে হাঁটু মুড়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে তাকে।
ছবির ক্যাপশনে রোয়া লিখেছেন, ‘নিজের কথা বলার অধিকার বজায় রাখতে আমাকে আমার দেশ ছাড়তে হচ্ছে। আবার জন্মভূমিকে ছেড়ে পালিয়ে যেতে হচ্ছে। আবার শূন্য থেকে শুরু। নিজের মৃত আত্মা আর ক্যামেরাটা সঙ্গে নিয়ে সাগরপাড়ে যাচ্ছি। বুকে প্রবল কষ্ট নিয়ে বলছি, বিদায় জন্মভূমি। আবার দেখা হবে।’
এর আগে প্রাণ ভয়ে আফগানিস্তানের রাস্তা দিয়ে দৌড়তে দেখা গিয়েছে আফগান পরিচালক সাহরা করিমিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহরা জানিয়েছিলেন, কীভাবে সেদেশে শিল্পীদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আফগানিস্তান থেকে ফ্রান্সে যেতে সক্ষম হয়েছেন রোয়া হায়দরি। আরেকটি পোস্টে নিজের ক্ষোভ উগরে গিয়েছেন তিনি। সেখানে লিখেছেন, ‘আমার কাহিনি এখানেই শেষ নয়। ভিতরে তীব্র যন্ত্রণা আর রাগ জমে রয়েছে। একদিন আমি ফিরে আসবই। আগের থেকে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে। নিজের মধ্যে আরও জ্ঞান ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে। সেই সমস্ত মানুষকে ধ্বংস করে দেব যারা আমার দেশের নিজে নৃশংস খেলা খেলেছে, আর দেশের মানুষকে হত্যা করেছে।’