শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন
মহামারি করোনাভাইরাস একের পর এক ধরন আরও শক্তিশালী হয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে সারা বিশ্বে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ার মতো একটি খবর পাওয়া যাচ্ছে একটি গবেষণা থেকে। একইসঙ্গে এখনও যারা টিকা নেননি, তাদের জন্যও এটি উদ্বেগের খবর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের চালানো এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, টিকা নেননি এমন গর্ভবর্তীদের জন্য ক্রমশ ঝুঁকির হার বাড়াচ্ছে ডেল্টা। দেশটির টেক্সাসের ডালাস শহরের প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি করোনা আক্রান্ত গর্ভবতীর তথ্য নেওয়া হয়েছে এ গবেষণার জন্য।
গর্ভবতীদের মধ্যে ডেল্টা প্রজাতিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ২০২১ সালের শুরুর দিকে ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। মার্চ মাসে তা একেবারে শূন্যতে নেমে আসে।
গবেষকদের দাবি, গ্রীষ্মের শুরুতেই ফের মাথাচাড়া দিতে থাকে ডেল্টা প্রজাতি। যার ফলে করোনা আক্রান্ত গর্ভবতীদের ঝুঁকির হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আমেরিকান জার্নাল অব অবস্টেরিক্স অ্যান্ড গাইনেকোলজি নামক গবেষণাপত্রে এসব প্রকাশিত হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, করোনার ঝুঁকি আটকাতে সব গর্ভবতী নারীর টিকা নেওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন গর্ভবতীদের জন্য টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করেছে।
চলতি বছরের জুনে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছিলেন, আলফা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন ‘ডেল্টা’ ৪০ শতাংশের বেশি সংক্রামক।
আর ডেল্টা ধরন আরেক তীব্র ছোঁয়াচে রোগ জলবসন্তের জীবাণুর মতো খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। করোনার টিকা নেওয়ার ফলে মানবদেহে যে প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তাকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম এই ডেল্টা ধরন। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসির (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) করা অভ্যন্তরীণ একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জুলাইয়ের এই তথ্য জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস।
সিডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ও মানুষকে সংক্রমিত করার ক্ষেত্রে মার্স, সার্স, ইবোলা ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকেও পেছনে ফেলেছে ডেল্টা। এমনকি মূল করোনাভাইরাসের চেয়েও এর সংক্রমণ ক্ষমতা কয়েকগুণ বেশি।
এ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামরি শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের মূল ধরনটি এতটা সংক্রামক ছিল না, সেটা ছিল অনেকটা সাধারণ সর্দি-জ্বরের ভাইরাসের মতো, যেখানে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি গড়ে আরও দুইজনকে আক্রান্ত করতে পারতেন।
