তিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের মাঠে আধিপত্য দেখিয়ে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। আজ সোমবার বুয়েনস আইরেসে শক্ত প্রতিপক্ষ উরুগুয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে গুনে গুনে উরুগুয়ের জালে তিন গোল দিয়েছে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার জয়ের ম্যাচে দলের হয়ে প্রথম গোলটি করনে লিওনেল মেসি। এরপর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রদ্রিগো দে পল। আর দ্বিতীয়ার্ধে জালের দেখা পান লাউতারো মার্টিনেজ। ২০১২ সালের পর এই প্রথম উরুগুয়ের জালে তিনবার বল পাঠাতে পারল আর্জেন্টিনা।
এদিন ম্যাচের ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আর্জেন্টিনা ২৩টি শট নেয়। এর মধ্যে ১০টি ছিল অনটার্গেট শট। তাতে গোল আসে তিনটিতে। বিপরীতে ১০ শট নিয়ে উরুগুয়ের ছয়টি ছিল অনটার্গেট।
অবশ্য উরুগুয়ের দুটি আক্রমণে গোল খেয়ে যেতে পারত আর্জেন্টিনা। কিন্তু কোনো অঘটন হয়নি। দারুণ দুটি সেভে আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ফলে জয়ের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
এ নিয়ে ১০ ম্যাচে ছয় জয় ও চার ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ২ নম্বরে রয়েছে আর্জেন্টিনা।
এদিকে, দিনের অন্য ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে হোঁচট খেয়েছে ব্রাজিল। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলছিল সেলেসাওরা, এর মাধ্যমে তাতে ছেদ পড়লো। এই প্রথম জয়হীন থেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মাঠ ছাড়লো তিতের দল।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা ৯ ম্যাচ জেতার পর প্রথমবার পয়েন্ট হারালো পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কলম্বিয়ার শারীরিক শক্তির ফুটবলের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছে বটে, তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা আর পায়নি। তাই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথমবার ড্রয়ের মুখ দেখলো সেলেসাওরা। দশম ম্যাচে এসে তাদের জয়রথ থামালো কলম্বিয়া।
তারপরও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটা ব্রাজিলেরই দখলে। ১০ ম্যাচে প্রথম ড্রতে ২৮ পয়েন্ট সেলেসাওদের। এক ম্যাচ কম খেলা আর্জেন্টিনা ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। আর ১১ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে কলম্বিয়া।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে জয় ছাড়া অন্য কোনও ফল দেখেনি ব্রাজিল। টানা ৯ ম্যাচ জেতা বলে কথা! তবে দশম ম্যাচে অন্য দৃশ্য দেখতে হলো। বাছাই পর্বে সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা তাদের এই ম্যাচেই দিতে হলো। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নেইমার ফিরেও জয়ের ধারায় রাখতে পারেননি। সতীর্থদের দিয়ে বেশ কয়েক সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি, কিন্তু সেগুলো কাজে আসেনি।
বারানকিয়ার এস্তাদিও মেত্রোপোলিতানোয় প্রথমার্ধে সেভাবে সুযোগ আসেনি দুই দলের। ব্রাজিল বল পজেশন নিয়ে বারবার কলম্বিয়ার রক্ষণভাগে গেলেও স্বাগতিকদের প্রেসিং ও শারীরিক শক্তির ফুটবলে সুবিধা করতে পারেনি। প্রতিআক্রমণে উঠে কলম্বিয়াও ভয় ধরিয়েছে।
গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলেছে। বিশেষ করে, রাফিনিয়া বদলি হয়ে মাঠে নামার পর ব্রাজিলের সুযোগ তৈরি হয়েছে বেশি। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছেন। যার মধ্যে ৭৬ মিনিটে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে লিডস তারকার নেওয়া বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কলম্বিয়ান গোলকিপার দাভিদ ওসপিনা ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন।