হাসনারা বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর থাকতেন বাবার বাড়ি। পরিবারের মূখে হাসি ফুটাতে স্থানীয় দালালদের খপ্পারে পরে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে। সৌদি আরব পৌঁছানোর পর থেকেই নির্যাতনের শিকার হতেন হাসনারা বেগম। সম্প্রতি নরসিংদীর শিবপুরে মাছিমপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন হাসনারা বেগম। তিনি মাছিমপুর গ্রামের মৃত: হাসান আলী ভূইয়ার মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারে কোন ভাই নাই, পাঁচ বোনদের মাঝে হাসনারা বেগম বড় মেয়ে। অভাব অনটনের সংসার সামলাতে বিদেশ গিয়ে চলতী বছরে প্রবাসীবন্দি দশা থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। বিদেশে অসহনীয় নির্যাতন সহ্য করে হাসনারা বেগম সোজা হয়ে হাটতে ও ঠিকমত কথাও বলতে পারেন না শুধু ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকে। এখন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় জীবনযাপন করছে হাসনারা বেগম।
স্বজনরা জানান, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে হাসনারা সৌদি আরব যান। সৌদি আরব যাওয়ার পর থেকেই প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতেন। তৎকালিন মাছিমপুর গ্রামের মৃত: আমিনুল হক শেখ এর ছেলে কানন শেখ ও তাঁর আত্মীয় হুমায়ূন দালালের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ৮শ সৌদি রিয়াল মাসিক বেতনের লোভে সৌদি আরব চলে যায়। ওখানে যাওয়ার পরে বেতন চাইলে চালাত নির্যাতন। কথামতে বেতন ও ঠিকসময় খাবার খেতে দেয়নি। দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর চলে নির্যাতনের মধ্যদিয়ে। গত জুলাই মাসে বন্দীদশা থেকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দেশে পাঠিয়েছে তার নিয়োগকর্তা। বিমানবন্দর থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এলাকায় একাধিক বার সালিসি করে কানন শেখ এর কাছ থেকে বেতনের কিছু টাকা আদায় করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
দালাল কানন শেখ জানাম, ৩০ হাজার টাকা অফিস খরচ হিসেবে নিয়েছি, সে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ফেরত আনতে পারিনি, মালিক খারাপ ছিল। দালাল হুমায়ূন জানান, যাওয়ার সময় কোন টাকা নেয়নি। দুই বছর পর্যন্ত চুক্তি ছিল,তখন ভালো ছিল। পরে আমাদের সাথে যোগাযোগ ছিল না।
শিবপুর উপজেলার ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি বমসার প্রধান রুবি বেগম বলেন, প্রবাস ফেরত নারী হাসনারা বেগম এর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিদেশ থাকা কালিন কোন বেতন/বোনাস বাকি থাকলে তা আদায় করে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।