দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিশপত্রের দাম হু হু করে বাড়ার কারণ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা প্রতিনিয়ত মিটিং করে যাচ্ছি। , তেল, চিনি, সবজিসহ যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে বলে কথা বলা হচ্ছে এমন প্রত্যেকটা পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেড়েছে। তাই আমাদের দেশে এর প্রভাব পড়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে গরিব কিংবা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির মাধ্যমে কম দামে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করছি।
রোববার (১৭ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজে আমাদের ২০ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। যার ৯০ শতাংশ আমরা ভারত থেকে আমদানি করে পূরণ করি। ভারত যখন দাম বৃদ্ধি করে দেয়, তখনই আমাদের দেশে তার প্রভাব পড়ে। মিসরসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করাটা অনেক সময়ের ব্যাপার, অনেক সময় আমদানিকালে পথিমধ্যে পচে যায়। এ বিষয়টি সকলকে বুঝতে হবে।
রফতানিতে ৫১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, রফতানিতে আমরা তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাচ্ছি। এ খাত থেকে ৮৩-৮৪ শতাংশ রফতানি আয় আসে। আমরা চাই অন্যান্য পণ্যের রফতানি বৃদ্ধি হোক। আমাদের যেন একটা পণ্যের ওপর অধিক নির্ভরশীলতা না থাকে। আমরা সেই অবস্থা থেকে বের হতে চাচ্ছি। চামড়া, পাট, প্রযুক্তি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইলস ও প্লাস্টিক ইত্যাদি খাতে আমরা ভালো করছি। রফতানি চলতি বছরে ৫১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আশা করছি আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে। ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করছে। টেলিফোন সুবিধা তো আরও বেশি। ২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি মিলবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের অনেক সুবিধা কমে যাবে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে যৌথভাবে সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিতব্য ওই আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান উপস্থিত ছিলেন।