সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা। তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর ভোলাকে আদালতে তোলা হয়েছিল। ভোলা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে ভোলা কী বলেছেন, সে সম্পর্কে কিছু জানাননি পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা। জবানবন্দি শেষে ভোলাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল থেকে ভোলাকে গ্রেফতার করে শনিবার চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়। মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবার দায়ের করা মামলার আসামি ভোলা। তাকে শুক্রবার রাতে বেনাপোল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ভোলা। তবে এর আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১৪ অক্টোবর ভোলার জামিন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বতী জামিন পান। মেয়াদ শেষ হওয়ায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার (১১ মে) ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পরে ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। তারপর তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।